জিবিনিউজ24ডেস্ক//
ভারতের সঙ্গে সিলেটের কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টনে জেলার অন্তত ৪ উপজেলার কৃষকরা উপকৃত হবেন। চাষাবাদের আওতায় আসবে ১০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি। যেসব জমি পানির অভাবে এখন মরা পতিত জমি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ জমি সেচের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে।
ভারতের বরাক নদী সিলেটের জকিগঞ্জের অমলসীদ দিয়ে প্রবেশ করে সুরমা ও কুশিয়ারায় বিভক্ত হয়েছে। কুশিয়ারার উৎসমুখ থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে শরীফগঞ্জ বাজার। এই বাজারের কাছেই কুশিয়ারা নদী থেকে উৎপত্তি রহিমপুর খালের। প্রায় আট কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রাকৃতিক খাল থেকে উৎপত্তি হয়েছে আরও অসংখ্য খালের। আশপাশের এলাকার কৃষকদের সেচের প্রধান উৎস এই খাল। তবে বর্ষায়ও তেমন পানি থাকে না খালগুলোতে। আর শুষ্ক মৌসুমে পুরো শুকিয়ে যায়।
টানা বৃষ্টি আর ঢলের কারণে সিলেটের নদনদীগুলো এখন পানি থাকলেও জকিঞ্জের শরীফগঞ্জ বাজার এলাকার রহিমপুর খালে হাঁটু পানি। হেঁটেই এই খাল পারাপার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
এই পানিশূন্যতার বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন- শুষ্ক মৌসুমে যখন খাল শুকিয়ে যায়, তখন পুরো গ্রাম শুকিয়ে যায়। গ্রামের পুকুরেও পানি থাকে না। শুষ্ক মৌসুমে পুরো শুকিয়ে যায় রহিমপুরসহ আশপাশের খালগুলো। ফলে বোরো ও আমন মৌসুমে সেচের অভাবে এসব খালের পাশের জমিতে চাষাবাদ করা যায় না। ভারতের সঙ্গে হওয়া পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন হলে জমিগুলো ফসলে ভরে উঠবে বলে তাদের বক্তব্য।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয় সূত্র জানায়, কুশিয়ারার উৎসমুখে নদীটির নাব্যতা কমে যাওয়ায় কয়েক যুগ ধরে রহিমপুর খাল শুকনো মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে রবিশস্য ও আরও বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে না। তবে রহিমপুর খাল দিয়ে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহার করার মাধ্যমে শুকনো মৌসুমে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে ওই হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের চাষাবাদ সম্ভব হবে এবং লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবেন।
সব আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে বাঁধ অপসারণ ও পাম্প হাউস চালু করতে পারলে আগামী শুকনো মৌসুমেই এলাকাবাসী উপকৃত হবেন বলে জানিয়েছে পাউবো সূত্র।
উল্লেখ্য, ভারত সফরে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরে সাতটি সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ভারত ও বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রথমেই ছিলো সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের আওতায় কুশিয়ার নদী থেকে বাংলাদেশ কর্তৃক ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার চুক্তি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন