বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সংকট চলছে গত ৫০ বছর ধরেই বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, গত তিনটি সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনের নামে প্রকৃতপক্ষে যা হয়েছে তাকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলা যায় না। বর্তমানে বিরোধী দলগুলো একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী করলেও প্রকৃত অর্থে কেবলমাত্র একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বর্তমান সংকটের সমাধান দিতে পারবে না।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্ব) নয়াপল্টনের আনোয়ার জাহিদ মিলনায়তনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি'র ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক বিশ্বে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত করে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আসন্ন। গত নির্বাচনের মতই নতুন কোনো কলাকৌশলে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে। সরকারের মন্ত্রীরা আগামী নির্বাচন এ সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে বলে দাবী করছে। কিন্তু, এটি দিবালোকের মত সত্য যে, দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ না ভেঙে নির্বাচন করলে যে ওই নির্বাচন কিছুতেই স্বচ্ছ করা যাবে না সে বিষয়টি একাধিকবার প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের আইন প্রনয়নের মাধ্যমে গঠিত আমলানির্ভর বর্তমান কমিশনের উপর রাজনৈতিক দলগুলো এখনও পরিপূর্ণ আস্থা অর্জন করতে পারে নাই। নতুন নির্বাচন কমিশন দলীয় সরকারের অধীনে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে বলে রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে না।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা খুবই কঠিন হবে। ক্ষমতাসীন দলের সদিচ্ছা না হলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যাবে না।
তিনি বলেন, চলমান সংকট সমাধান না হলে দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ শঙ্কায় পড়তে পারে। আগামীতে যদি একতরফা নির্বাচন হয়, আর সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে গণতান্ত্রিক বিশ্বে বাংলাদেশের ভূলুণ্ঠিত ভাবমূর্তি উদ্ধার করা যাবে না। তাই সরকারের উচেত সকল রাজনৈতিক দলের সাথে বসে খোলামন নিয়ে আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করে আগামী নির্বাচনকে সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করা।
সভাপতির বক্তব্যে খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা বলেন, রাজনৈতিক দল হলো গণতন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি। দলে গণতান্ত্রিক ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকলে জাতি সেই দলের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা প্রত্যাশা করতে পারে না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে যা, জাতি হিসাবে আমাদের লজ্জিত করছে। দেশের রাজনীতি আজ অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজরা অপকৌশলে দখল করে ফেলেছে। এ অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা'র সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা'র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি-জেএসপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনিচুর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মিতা রহমান, এনডিপির ভাইস চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অর্থসম্পাদক এডভোকেট মোঃ ফরিদউদ্দীন ভূঁইয়া, সহকারী মহাসচিব আশরাফুল ইসলাম খোকন, দপ্তর সম্পাদক আর কে রিপন, ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব আবদুর রহিম জাহিদ প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন