জিবিনিউজ24ডেস্ক//
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার পূর্বসূরী নওয়াজ শরিফের সমালোচনা করতে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে একজন সৎ ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হওয়া এক ভিডিওতে ইমরান খানকে বলতে শোনা যায়, ‘দেশের বাইরে নওয়াজ শরিফের শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। ক্ষমতার সুবিধা নিয়ে, দুর্নীতির মাধ্যমে বিশ্বের আর কোনো নেতা এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাগাতে পারেননি।’
‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের কথাই চিন্তা করুন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্পত্তির পরিমাণ কত? দেশের বাইরেই বা কী পরিমাণ সম্পত্তির মালিক তিনি?’
গত আগস্টে নরেন্দ্র মোদির সম্পত্তির বিবরণ দিয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সেই বিবরণীতে বলা হয়েছে, ২০২২-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ২ কোটি ২৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৫০৪ রুপি। আরও বলা হয়, মোদির এখন কোনও নিজস্ব বাড়ি, গাড়ি, জমি কিছুই নেই। অর্থাৎ তার নামে কোথাও কোনো স্থাবর সম্পত্তি নেই।
ইমরান খানের মুখে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা বেশ বিরল। কারণ, ২০০৯ সালে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ওপর ভর দিয়ে ভারতের সংবিধানের ৯০ নম্বর ধারা সংশোধন করে বিজেপি। এই সংশোধনের পর ‘স্বায়ত্বশাসিত প্রাদেশ’ হিসেবে মর্যাদা হারায় জম্মু ও কাশ্মির।
ওই ঘটনার জেরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন ইমরান খান। জম্মু ও কাশ্মিরের স্বায়ত্বশাসিত প্রাদেশিক মর্যাদা ফিরিয়ে না দিলে ভারতের সঙ্গে কোনো প্রকার সমঝোতায় যাবেন না বলেও একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু পাকিস্তানের বিগত প্রধানমন্ত্রীদের মতো ইমরান খানকেও নিজের মেয়াদ পূর্ণ না করেই বিদায় নিতে হয়েছে। চলতি বছর ১০ এপ্রিল পার্লামেন্টে বিরোধী আইনপ্রণেতাদের অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান এবং দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হন শেহবাজ শরিফ, যিনি দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই।
পাকিস্তানের বহুল আলোচিত আল-আজিজিয়া স্টিল মিলস দুর্নীতি মামলায় আদালতে দোষী হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রিত্বের পদ হারান দেশটির তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তার পর ২০১৯ সালে চিকিৎসার জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান নওয়াজ শরিফ, এখনও সেখানেই আছেন তিনি।
বুধবার পোস্ট করা ভিডিওবার্তায় ভারতের কূটনীতিরও প্রশংসা করেন ইমরান খান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত কোয়াডের সদস্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক চাপ থাকা সত্ত্বেও কেবল দেশের জ্বালানির মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও জনগণকে ভোগান্তি থেকে দূরে রাখতে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে তারা।’
‘আমরাও এই ধরনের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, বর্তমানে যে চোরের দল ক্ষমতায় আছে, বিদেশে সম্পদ পাচারেই তাদের আগ্রহ বেশি।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন