আন্তর্জাতিক ডেস্ক //
নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানে শুরু হওয়া হিজাববিরোধী আন্দোলন চতুর্থ সপ্তাহে গড়িয়েছে। উত্তাল এই পরিস্থিতিতে রোববার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত দুই সদস্য নিহত হয়েছেন বলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মারা যায় মাহসা আমিনি।
পুলিশি নির্যাতনে আমিনির প্রাণহানি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এই ঘটনার পর ইরানে গত তিন বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশটির হাজার হাজার মানুষ।
ইরানের এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই বিক্ষোভকারী। তবে নিহতদের মধ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।
দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ বলছে, রাজধানী তেহরানের দক্ষিণের একটি শহরে শনিবার রাতে বিক্ষুব্ধ জনতার সাথে সংঘর্ষের সময় বাসিজ বাহিনীর একজন সদস্য মাথায় গুরুতর আঘাত পান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ইরানের আধা-সামরিক বাহিনী বাসিজ। দেশটির সামরিক বাহিনীর আদর্শিক শাখা ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোরের সাথে যুক্ত এই বাহিনী। আইআরএনএ বলেছে, শনিবার কুর্দিস্তান প্রদেশের রাজধানী সানন্দাজে বিক্ষোভের সময় অপর একজন গার্ডস সদস্যও নিহত হয়েছেন। এই শহরের বাসিন্দা ছিলেন দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হাতে নিহত মাহসা আমিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে ইরানে নিহতদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ১৪ সদস্য রয়েছেন। এছাড়া দেশটির অন্য সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজ অ্যাজেন্সি গত ২৭ সেপ্টেম্বরের এক প্রতিবেদনে জানায়, হিজাববিরোধী আন্দোলনের সময় অন্তত ৬০ প্রাণ হারিয়েছেন।
যদিও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে ইরানের চলমান বিক্ষোভ-আন্দোলনে শতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন