ইরানে হিজাববিরোধী বিক্ষোভে গুলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক //

নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানে পঞ্চম সপ্তাহে গড়ানো হিজাববিরোধী আন্দোলনে গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। বুধবার দেশটির অন্তত দুটি শহরে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা দাবি করেছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, ইরানে চলমান হিজাববিরোধী আন্দোলনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে।

নরওয়ে-ভিত্তিক দুটি মানবাধিকার সংস্থা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের ভিডিও শেয়ার করেছে। এতে দেখা যায়, মাহসা আমিনির জন্মস্থান সাকেজ ছাড়াও ইসফাহান ও কারাজ শহরে বুধবার বিক্ষোভকারীরা হিজাববিরোধী আন্দোলন করছেন। সরকার ও হিজাববিরোধী বিক্ষোভে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনবারীরা। পরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়।

বাধ্যতামূলক হিজাব পরার আইন উপেক্ষা করে রাজধানী তেহরানে বিক্ষোভ করেছেন শত শত নারী। এ সময় তেহরানের রাস্তায় এক নারী শিক্ষার্থীকে ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ স্লোগান দিতে শোনা যায়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তেহরানের রাস্তায় নারীদের বিক্ষোভের এই ভিডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

এক ভিডিও টুইট করে ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বলেছে, দেশজুড়ে চলমান তীব্র প্রতিবাদ ও ধর্মঘটের মাঝে ইসফাহান শহরে গুলির শব্দ শোনা গেছে। কুর্দিশ মানবাধিকার সংস্থা হেনগাওয়ের মতে, সাকেজ শহরে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া খেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে গেছে।

হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাহসা আমিনি।

পুলিশি নির্যাতনে আমিনির প্রাণহানি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এই ঘটনার পর ইরানে গত তিন বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশটির তরুণ-তরুণী, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও। আন্দোলনকারী তরুণ-তরুণীরা হিজাব খুলে প্রায় প্রত্যেক দিনই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মুখোমুখি হচ্ছে।

ইরানের চলমান বিক্ষোভ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই বিক্ষোভকারী। তবে নিহতদের মধ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও শিশুরাও রয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, ইরানে হিজাববিরোধী আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় কমপক্ষে ২৮ শিশু মারা গেছে। এছাড়া আরও শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করে দেশটির কারাগারে বন্দী করা হয়েছে।

বুধবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি আবারও দেশজুড়ে চলমান আন্দোলনে ‘শত্রুরা’ ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন