সরকারি শিশু পরিবারে বেড়ে ওঠা ৩ কন্যার জাঁকজমক বিয়ে

জিবিনিউজ24ডেস্ক//        

পরিবারের পরিচয় ছাড়াই সরকারের ছোটমণি নিবাসে বড় হয়েছেন মর্জিনা আক্তার (২৩), মুক্তা আক্তার (২০) ও তানিয়া আক্তার ( ২০)। পরিবার ছাড়া বেড়ে ওঠা এ তিন তরুণীর জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। 

এ বিয়েতে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য অনুসারে ধরা হয় গেট। আয়োজন করা হয়েছে কয়েকশ মানুষের খাবারের। বুধবার নগরীর রউফাবাদ সমাজসেবা কার্যালয়ের কমপ্লেক্সে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিলি করা হয় রঙিন আমন্ত্রণপত্র।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাত ৯টায় চট্টগ্রামের অফিসার্স ক্লাবে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিয়েতে তিন কন্যার জন্য উপহার পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, রাউজান থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেন, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রমুখ। তিন বরের পক্ষ থেকে এসেছিলেন আরও ১০০ বরযাত্রী। 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমা বলেন, তিন কন্যা জন্মের পরই পরিবার ছাড়া বেড়ে উঠেছে। আমরা তাদের পড়ালেখা করানোর পাশাপাশি চাকরির ব্যবস্থা করেছি। তাই আমরা তাদের অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে নিজেদের মেয়ের বিয়ের মতো করেই জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিয়ের আয়োজন করেছি। সাধারণ ১০টা বিয়েতে যেসব আনুষ্ঠানিকতা মানা হয় আমরা তার সবগুলোই মানার চেষ্টা করেছি। 

dhakapost

তিনি বলেন, তাদের পরিবার নেই, বাবা নেই। তাই তারা যেন কখনও এই অভাবটা বোধ না করে সেজন্যই আমাদের এতো আয়োজন। 

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, তিনজনের প্রত্যেককে দুই ভরি স্বর্ণালংকার এবং দুই লাখ টাকা করে ফিক্সড ডিপোজিটের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া প্রত্যেক যুগলকে একটি করে ফ্রিজ, টেলিভিশনসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, চার বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া মুক্তা আক্তারকে আদালতের নির্দেশে আনা হয়েছিল সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সরকারি শিশু পরিবারে। বর্তমানে চাকরি করছেন আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে। বিয়েও হচ্ছে একই হাসপাতালের নিরাপত্তা প্রহরী মোহাম্মদ নুর উদ্দিনের সঙ্গে। 

মুক্তা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাবা-মা নেই। আমরা ছোটমণি নিবাসেই বড় হয়েছি। বিয়ের মধ্য দিয়ে আমরা আরও একটি পরিবার পাব আশা করি। আমরা কখনো কল্পনা করিনি এমন আয়োজন করে বিয়ে হবে। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। 

মর্জিনা আক্তার সমাজসেবা কার্যালয় পরিচালিত ছোটমণি নিবাস ও সরকারি শিশু পরিবারে বেড়ে ওঠেন। সেখানে থেকে সরকারি মহিলা কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ার পাশাপাশি আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। তার বিয়ে হয়েছে ওমর ফারুকের সঙ্গে। তিনিও চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালে কর্মরত। 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন