জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশ, বৈশ্বিক দায় ও দায়িত্বশীলতা

gbn

দে লো য়া র  জা হি দ ||

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশের এ জয়ের পথ মোটেই মসৃন ছিল না।  দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নানাহ বিতর্ক ও প্রশ্ন থাকায় বাংলাদেশের এ জয়টা ছিল খুবই চ্যালেঞ্জের, ছিল প্রত্যাশার চেয়েও
বড় প্রাপ্তির।  এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪টি আসনের মধ্যে বাংলাদেশ সোহো আরও ৩টি দেশ বিজয়ী হয়েছে। মর্যাদাপূর্ণ ওই পর্ষদের ভোটাভুটিতে ১৯৩ ভোটের মধ্যে ১৬০ ভোট পেয়ে বাংলাদেশ শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের এ প্রাপ্তি নিয়ে জাতি হিসেবে
আমরা গর্বিত। শোষক আর শোষিতের পৃথিবীতে মানবাধিকারের ব্যাপারে বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন সোচ্চার ।  মানুষের মানবিক অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণার দেশের ইতিহাসের শিকড় অনেক গভীরে।  গত  ১১ অক্টোবর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, চিলি, কোস্টারিকা, জর্জিয়া, জার্মানি, কিরগিজস্তান, মালদ্বীপ, মরক্কো, রোমানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান এবং ভিয়েতনামকে মানবাধিকার কাউন্সিলের (এইচআরসি) জন্য নির্বাচিত করায় নড়ে চড়ে বসেছে বোদ্ধামহল।

 
বিশ্বায়ন জাতি-রাষ্ট্রের  জাতীয় সীমানার ঐতিহ্যগত দৃষ্টিভঙ্গিকে চ্যালেঞ্জ করে, এবং "অন্তর্বাদী" রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সমস্যাগুলির ক্রমবর্ধমান বিন্যাস মোকাবেলা করার জন্য বিশ্বব্যাপী কৌশল তৈরি করার জন্য সরকারগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে (জুন ও রাইট, ১৯৯৬, পৃ. ১৫)।

বৈশ্বিক বিশ্বে জাতি-রাষ্ট্রের ভূমিকা আন্তঃনির্ভরতার প্রধান কারণ হিসাবে মূলত একটি নিয়ন্ত্রক। যদিও জাতি-রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ভূমিকা অনেকাংশেই এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে, যে রাজ্যগুলি আগে বিচ্ছিন্ন ছিল তারা ও এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও নীতি-নির্ধারণের জন্য একে অপরের সাথে জড়িত
 হতে বাধ্য হয়েছে।  'দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত' আধুনিক রাষ্ট্রের অধীনে সরকার নাগরিকদের যত্ন নেওয়ার কথা আধুনিক রাষ্ট্র তার সীমানার মধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উপর অভূতপূর্ব নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে। আধুনিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য যেমন  : অঞ্চল, বাহ্যিক ও
অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব, বৈধতা এবং আমলাতন্ত্র।  এগুলোর মাধ্যমে একটি উন্নত রাষ্ট্র তার জনগণকে নিরাপদ রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে। রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে যে তার সীমানা সিল এবং সুরক্ষিত রয়েছে।  একটি সুনিপুণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোর মাধ্যমে বাজারে সমাজে একীভূত করতে
হবে। ‘আধুনিক রাষ্ট্র তার জনগণের কল্যাণের জন্য সচেষ্ট থাকবে।   তাই 'কল্যাণ রাষ্ট্র' নামে আরেকটি ধারণার অস্তিত্ব তৈরী হয়েছে।

আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের নব্য-উদারনৈতিক দৃষ্টান্ত হলো বৈশ্বিক শাসনের  একটি নৈতিক প্রক্রিয়া । রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের উপর পুঁজি ও বাজার ব্যবস্থায়  বিশেষাধিকার এ শাসনের ফাঁক তৈরি করেছে, যা বেসরকারী এবং সুশীল সমাজ সেক্টরের অভিনেতাদেরকে রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ করে
তুলছে।  বিশ্বব্যাপী শাসন যেভাবে অনুশীলন করা হয় তা কাজ করছে না (কোয়েন এবং পেগ্রাম, ২০১৫,: ৪১৭),

ইউনাইটেড নেশনস ফর হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল জাতিসংঘের একটি সংস্থা যার লক্ষ্য সারা বিশ্বে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা।  কাউন্সিল জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করে এবং সংগঠন ও সমাবেশের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিশ্বাস ও ধর্মের স্বাধীনতা
নারী অধিকার, LGBT অধিকার, এবং জাতিগত ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করে.(উইকি সূত্র
 
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা  যতটা না আত্মতৃপ্তির এর চেয়ে বেশি আত্মউপলব্দীর।  এ দায়িত্ব বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার কৌশল ও সমাধানগুলোকে  নিয়ে কাজ করার, জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠে অন্য রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা নেয়ার।


[লেখক : বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফ্যাকাল্টি মেম্বার, সভাপতি, বাংলাদেশ নর্থ আমেরিকান জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক, কানাডা নিবাসী]

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন