জিবিনিউজ24ডেস্ক//
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেড় মাস না পেরোতেই পদ হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন লিজ ট্রাস। শতাধিক ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা চলতি সপ্তাহে লিজ ট্রাসকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টায় নামছেন বলে খবর বের হয়েছে।
তাই প্রশ্ন উঠেছে- ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঠিক কতদিন আর টিকে থাকতে পারবেন লিজ ট্রাস?
সোমবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির কিছু এমপি বর্তমান পরিস্থিতিতে হাল ছেড়ে দেওয়ার কাছাকাছি বোধ করছেন। এছাড়া দেশের বাজারে কয়েক সপ্তাহের অশান্তি এবং রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার পর অনেকের মেজাজও বেশ খারাপ।
ব্রিটেনের একজন মন্ত্রী বেশ অযাচিতভাবেই বলেছেন, ‘কাজ শেষ... (নির্বাচনে) আমরা জিততে পারব না’। লিজ ট্রাসের ওপর আস্থা রাখা এই মন্ত্রী স্বীকার করছেন, সাধারণ নির্বাচন যখনই অনুষ্ঠিত হোক, তাদের দল আসন হারাবে।
বিবিসি বলছে, গত ৭২ ঘণ্টা ধরে যে বিতর্ক চলছে তা হলো- লিজ ট্রাস ডাউনিং স্ট্রিটে আর কতক্ষণ টিকে থাকতে পারবেন। দেড় মাসেরও কম সময় আগে দায়িত্ব নেওয়া ব্রিটেনের এই প্রধানমন্ত্রীকে তার পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য প্রকাশ্যেই আহ্বান জানিয়েছেন অল্প সংখ্যক কনজারভেটিভ এমপি। তবে ট্রাসকে প্রকাশ্যেই সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো দলীয় এই এমপিদের সংখ্যা শিগগিরই আরও বাড়তে পারে।
এছাড়া বিবিসির সাথে কথোপকথনে অন্য অনেকে এটাও যুক্তি দিচ্ছেন, পরবর্তী নির্বাচনের আগেই লিজ ট্রাসকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে চলে যেতে হবে। কেউ কেউ অবশ্য বিশ্বাস করেন, মাস দেড়েক আগে ট্রাস যে পদ পেয়েছেন সেখানে আরও কয়েক মাস তিনি থাকতেও পারেন।
কিন্তু ক্রমেই সংখ্যা বাড়ছে এমন একটি অংশের দাবি, লিজ ট্রাসের আর কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি আর হয়েতা কয়েকদিন বাকি আছে। যদিও এটি কীভাবে হবে বা লিজ ট্রাস পদত্যাগ করলে কারা দায়িত্ব নেবে সে সম্পর্কে কোনো স্পষ্টতা নেই।
ব্রিটেনের সাবেক একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী তো লিজ ট্রাসের বিষয়ে সিদ্ধান্তই জানিয়ে দিলেন। তিনি বলছেন: ‘মানুষ জানে যে, এটি শেষ। তবে এটি (লিজ ট্রাসের প্রস্থান) কীভাবে এবং কখন সেটাই এখন প্রশ্ন।’
তবে বিবিসি বলছে, নিজেকে নিয়ে আশা ছাড়ছেন না লিজ ট্রাস। মূলত আশা যে এখনও শেষ হয়ে যায়নি সেটি মন্ত্রী এবং এমপিদের বোঝাতেই সোমবারের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করবেন তিনি।
লিজ ট্রাস পার্লামেন্টে টোরি এমপিদের ১০০ জনের শক্তিশালী ওয়ান নেশন গ্রুপের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন - এবং ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের সাথে আলোচনাও করবেন। সেখানে মাঝারি মেয়াদে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্পর্কে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হবে। এছাড়া অন্যান্য সংসদ সদস্যদেরও কফির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে কারণ ব্রিটেনের এই প্রধানমন্ত্রী তাদের মনও জয় করতে চাইছেন।
এছাড়া ডাউনিং স্ট্রিট থেকে যে বার্তাটি দেওয়া হচ্ছে তা হলো- তারা এখন সবকিছু শুনছেন। গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে দেশটির অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাস। হান্টের এই নিয়োগ সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী ট্রাসকে কিছু সময় পাইয়ে দেবে। কিন্তু সেই সময়টা কি যথেষ্ট হবে?
বিবিসি বলছে, অর্থমন্ত্রী পদে জেরেমি হান্টের নিয়োগে কিছু টোরি এমপি সন্তুষ্ট। সাবেক একজন ব্রিটিশ মন্ত্রী মনে করেন, ‘তিনি (জেরেমি হান্ট) দেশের প্রকৃত প্রধানমন্ত্রী।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন