জিবিনিউজ24ডেস্ক//
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সেই লিখাচেভ বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বুধবার (১৯ অক্টোবর) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি)’র দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লি পাত্র) বসানো হয়েছে।
দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন— উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই প্রচেষ্টার অংশ হতে পারা রোসাটম করপোরেশনের জন্য অত্যন্ত সম্মানের।
রোসাটম মহাপরিচালক বলেন, সব আইনকানুন ও বিধিবিধান মেনেই রোসাটম বাংলাদেশে এই প্রথম ২৪০০ মেগাওয়াটের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে সহায়তা করছে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পারমাণবিক চুল্লিপাত্র (রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল) স্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪০০ মেগাওয়াটের রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে এই রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (আরপিভি) স্থাপনকার্য উদ্বোধন করেন। রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেলের এই স্থাপন, বাংলাদেশকে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার আরো কাছে নিয়ে গেল।
লিখাচেভ বলেন, রাশিয়ান রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশন ‘রোসাটম’ আগামী বছর থেকেই এই পারমাণবিক চুল্লিতে (রিঅ্যাক্টর) পরমাণু জ্বালানি সরবরাহের জন্য অক্লান্তভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজে অসামান্য অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা এখন প্রথম ইউনিটে কুলিং ইকুইপমেন্ট (শীতলীকরণ যন্ত্র) স্থাপনে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
রোসাটম মহাপরিচালক বলেন, রোসাটম বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যারা ভবিষ্যতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করবেন। তারা ধাপে ধাপে প্রশিক্ষিত হচ্ছেন। রোসাটম ইতোমধ্যেই রাশিয়ায় ৩০০ বাংলাদেশিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
লিখাচেভ বলেন, ৬২৪ জনের মতো বিশেষজ্ঞ কাজ শুরু করেছেন। আমরা আরো ১৭ জন বিশেষজ্ঞকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যারা ভবিষ্যতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার আন্তরিক সম্পর্কের কারণে করোনা মহামারিতেও রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ অব্যাহত ছিল।
প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউটিট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এবং ২০২৪ সাল থেকে কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট থেকে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরমাণু জ্বালানি কমিশন রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে রাশিয়া। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের পাশাপাশি এটি পরিচালনার জন্য জনবল প্রশিক্ষণও দিচ্ছে রাশিয়া। বাণিজ্যিকভাবে চালু হওয়ার পর থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ৬০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দীর্ঘমেয়াদি সেবার পাশাপাশি এই কেন্দ্রটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্বন ডাই অক্সাইড না ছড়িয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন