জিবিনিউজ24ডেস্ক//
রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে আসা নেতা-কর্মীরা এখন খোশ মেজাজে আছেন। জেলার কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সমাবেশ শুরুর আগের দিনেই অনেকটা ভরে গেছে মানুষে। রাতে মাঠে অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা এখন ফোনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীতের কষ্ট ভুলে কেউ কেউ মেতেছেন গান-গল্পে।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে সমাবেশের মাঠ ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
মাঠের বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীরা জটলাবেঁধে কেউ ফেসবুক স্ক্রলিং করছেন, কেউ কথা বলছেন আবার অনেককে তাদের ফোনে গেম খেলতেও দেখা গেছে। শীত উপেক্ষা করে অনেকেই আবার ক্লান্ত শরীরে খড় বিছিয়ে গায়ে পাতলা কম্বল জড়িয়ে শুয়ে পড়েছেন।
মাঠে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, আমরা অনেক দূর থেকে আসছি। এখন ক্লান্ত তাই বিশ্রাম নিচ্ছি। কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে আসা আরেফুল ইসলাম বলেন, আজ রাতে আর তেমন কাজ নেই তাই বসে বসে সময় পার করছি। মোবাইলে পর্যাপ্ত চার্জ রয়েছে একারণে গান শুনে মনটাকে একটু হালকা করে নিচ্ছি।
পঞ্চগড় থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ওয়াদুদ আলী বলেন, বাড়ি থেকে অনেক ভেঙে ভেঙে এসেছি। ২০ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে এসেছি। কিছুক্ষণ বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করলাম। পরে খড় বিছিয়ে গায়ে পাতলা কম্বল জড়িয়ে শুয়ে পড়ছি। একটু শীত অনুভব করছি।
এদিকে বিকেলে থেকে মাঠে আসা অনেক নেতা-কর্মীকে সমাবেশস্থল সংলগ্ন ক্রিকেট গার্ডেন ঘুরতে দেখা যায়। তাদের অনেকে পাশের রংপুর শিল্প ও বাণিজ্য মেলা ঘুরে ঘুরে সময় পার করেন। কেউবা আবার মোবাইল ফোনে ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় মেলায় কথা হয় নীলফামারীর ডোমার থেকে আসা বিএনপির নেতা সুলতান ইকবালের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার এলাকা থেকে প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মী এসেছে। অনেকে মাঠে বসে আছে। আমরা একটু ঘুরছি। মাঠে গেলে তাদের দেখতে পাবেন।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে এসেছেন ছাত্রদল নেতা সোহেল রানা। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে ট্রেনে এসেছি। বাড়ি থেকে রেল স্টেশন যাওয়ার পথে পুলিশ তল্লাশিও করেছেন। একটু মেলা দেখতে আসলাম, এখনই মাঠে যাব। রাতে মাঠেই থাকব।
ঠাকুরগাঁও থেকে আসা বিএনপি নেতা মনোয়ার হোসেন বলেন, ট্রাকে করে এখানে এসেছি। আমাদের এলাকা থেকে ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী সমাবেশস্থলে এসেছেন। আমাদের নেতা-কর্মীরা মাঠেই আছেন।
এদিকে জেলার ছাত্রাবাসগুলোতে (মেস) পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা ধর্মঘট উপেক্ষা করে রংপুরে এসেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করছে প্রশাসন। সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। শুধু সড়কে নয় নগরীর মেসগুলোতে বহিরাগতদের থাকতে নিষেধ করা হয়েছে। অনেকে আবাসিক হোটেলগুলোতে বুকিং দিয়েছে, কিন্তু পুলিশের ভয়ে যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও আমরা গ্রেপ্তারের খবর পাইনি।
তিনি আরও জানান, সমাবেশস্থলে সন্ধ্যার পর থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক হাওয়া হয়ে গেছে। ফলে এখান থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকার পরিকল্পিতভাবে এসব করছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার নুরে আলম মিনা বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছি। সমাবেশ ঘিরে যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে, সেজন্য কয়েক দফায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন