ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইর উদ্যোগে মুজিব বর্ষ ও ঢাবি শতবর্ষ পালিত

জিবি নিউজ || লন্ডন  ||

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকে চার মাসব্যাপী "দ্বৈত শতবর্ষ" উদযাপন করেছে। এ উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৃটেনের নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বাংলাদেশের অভ্যূদ্বয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধুর নিয়ামক ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন স্বাধীনতার পর যেমন দেশে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ জ্ঞানভিত্তিক উন্নত সমাজের রূপরেখা প্রতিষ্ঠার প্রধান রচয়িতা বঙ্গবন্ধু তেমনি উন্নয়ন, গবেষণা ও দেশ গঠনের নিমিত্তে দক্ষ জনশক্তি গড়ায় প্রধান ভূমিকা পালন করছে দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ঘটনা উল্লেখ করেন। চল্লিশের দশকে বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন কিন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারীদের আন্দোলনে অংশ নিয়ে ছাত্রত্ব হারান। স্বাধীন দেশে রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনূষ্ঠানে যোগ দেবার পূর্ব রাত্রে স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি চালু করায় হাই কমিশনার অ্যালুমনাই ইন দ্য ইউকের প্রতি ধন্যবাদ জানান। 
দ্বৈত শতবার্ষিকীর সমসংগঠনের সভাপতি বীর  মুক্তিযোদ্ধা ও ডাকসুর প্রাক্তন সদস্য দেওয়ান গৌস সুলতানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ পর্বে স্মৃতিচারণ ও আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র অ্যালুম্নাই হাবিব রহমান , শাহগীর বক্ত ফারুক, নাজিরুদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ আব্দুর রাকীব. সৈয়দ এনামুল ইসলাম,  নিলুফা ইয়াসমিন হাসান, সৈয়দ হামিদুল হক ও মিসবাহউদ্দিন ইকো। আমন্তিত ও উপস্থিত অতিথিদের মধ্য থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল এম এ সালাম বীর প্রতীক,  ডঃ হাসনাত হোসাইন এমবিই, জালাল আহমেদ, ওয়ার্দি কাউন্সিলের মেয়র কাঃ ফেরদৌসী হেনা চৌধুরী এবং এনটিভি-র সিইও সাব্রিনা হোসেন। 

দ্বৈত শতবার্ষিকীর এই  সমাপনি সভার শুরুতে প্রয়াত রাণীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। সংগঠনের সর্ব জ্যেষ্ঠ সদস্য একুশের গান খ্যাত আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মৃত্যতেও শোক প্রকাশ করা হয়। সেসাথে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারীদের স্মরণ করা হয়। সভায় বাংলাদেশ জেনোসাইড এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী বিপ্লবী লীলা নাগের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্থাপনার নামকরণের দাবী করে প্রস্তাব পাশ করা হয়। প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করেন যথাক্রমে সহুল আহমদ মকু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান  ও মাহারুন আহমেদ মালা। এগুলো সমর্থন করেন যথাক্রমে সিরাজুল বাসিত চৌধুরী, শাহ আকবার আলী ও সৈয়দ জাফর। 

পূর্ব লন্ডনের একটি হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির ভাষনে দেওয়ান গৌস সুলতান বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ও ত্যাগ অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেক গুন বেশী। আর স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত স্মরণে দ্বৈত শতবার্ষিকী উদযাপন এক বিরল ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অবদান বিবেচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাধীনতা পদক প্রদান অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। এ পর্বের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন এবং সহ সম্পাদক  সৈয়দ আবু আকবর ইকবাল  ও মাহারুন আহাম্মেদ মালা ।

মুক্তিযোদ্ধা, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের পরিবারবর্গের উপস্থিতিতে জমজমাট এ অনুষ্ঠানে দ্বৈত শতবার্ষিকীর বিগত চার মাসের অনুষ্ঠান সমুহের একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

শেষ পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রীপা রাকীব, মিজানুর  রহমান ও এরিনা সিদ্দিকী সুপ্রভার সঞ্চালনায় সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট শিল্পী তারেক-যোবায়ের ভাতৃৃদ্বয়, গৌরী চৌধুরী, সাইদা তানিয়া, রিংকু সিনহা, মোস্তাফা কামাল মিলন, তামান্না ইকবাল, সামিনা দেওয়ান, স্যামুয়েল চৌধুরী, বেলাল রশীদ, নীলা নিকি ও রীপা রাকীব । কবিতা আবৃত্তি করেন সাদিয়া গাজী অন্তরা, এম কিউ হাসান এবং সৈয়দ ইকবাল । নৃত্য পরিবেশন করেন প্রেরনা মন্ডল ও প্রীতি দ্বিপা বড়ুয়া।

এছাড়াও একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয় এবং দ্বৈত শতবার্ষিকীর কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠান স্থলে বিখ্যাত মধুর কেন্টিন ও অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যের রেপ্লিকা প্রস্তুত করা হয় যা প্রাক্তনিদের মধ্যে প্রচুর সাড়া ও রোমাঞ্চ সৃষ্টি করে। দিনভর আনন্দ উপভোগ করে ও ভবিষ্যতের কর্মসূচী প্রণয়ন করে অনেকেই প্রচুর তৃপ্তি নিয়ে বাড়ী ফিরেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন