সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা |
উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা সাহিত্য পরিষদের সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশ বরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং লেখকদের মহামিলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তন।
গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ঢাকা সাহিত্য পরিষদের সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী আহ্কাম উল্লাহ্। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বরেণ্য কবি আলমগীর রেজা চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি্র সাবেক রেজিস্টার, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও অনুবাদক কে. এম আব্দুল মোমিন এবং রেডটাইমস পত্রিকার সম্পাদক কবি সৌমিত্র দেব প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি ও লেখক, গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হক।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন কবি আলমগীর রেজা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন মেহবুবা হক রুমা, নুরুন নাহার শ্রাবণী, রোকসানা মহুয়া, ফৌজিয়া ইসলাম তিষা, জেবুন্নেসা মুনিয়া, ফাহিমা সারওয়ার সুফল এবং জান্নাত তায়েবা।
কবি আলমগীর রেজা চৌধুরী বলেন, "শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার বিষয়টা এমনই যে, “ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো মতো। তবু এর ভেতরে একরকম মাদকতা বা নেশা আছে। শিল্প সাহিত্য করতে হলে অনেক মানুষের জীবন দেখতে হয়। মানুষের সাথে মিশতে হয়।”
প্রধান অতিথি আহ্কাম উল্লাহ্ বলেন, “আমি বিস্মিত হয়েছি, ৫০ বছরের বাংলাদেশে ঢাকা সাহিত্য পরিষদের বয়স মাত্র সাত বছর! এর বয়স ৩৭ বছর, ২৭ বছর, বা ১৭ বছর হতে পারতো। আমি কলকাতা সাহিত্য পরিষদে গিয়ে বিস্মিত হয়েছি ওদের সংগ্রহশালা দেখে। আজকে ঢাকা সাহিত্য পরিষদ কত বছর পিছিয়ে রয়েছে। এই পিছিয়ে থাকাকে সমান্তরাল করতে হবে। আরও বহু মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ”
তিনি বলেন, পদ কখনো মানুষকে সম্মান এনে দেয়না, সম্মানিত মানুষ পদকে অলংকৃত করে। যে মানুষ সম্মানিত হয়, যে মানুষ নিজেকে মানুষ হিসেবে জনগনের হয়ে থাকে সেই মানুষটি ঐ পদকে সম্মানিত করে তোলে।যদি ঢাকা সাহিত্য পরিষদের সদস্যরা এই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যায়, তাহলে আমাদের সকলের পথ এক হবে।”
তিনি আরও বলেন, ''বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল এক শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য। মাটি ও মানুষের সাথে যোগাযোগ ছিল বঙ্গবন্ধুর, এবং তিনি কবিতা পড়তেন, সাহিত্য পড়তেন।
কবি জায়েদ হোসাইন লাকী বলেন, "তরুণদের সাথে প্রবীনদের একটা ব্রিজ হিসেবে কাজ করে চলেছে ঢাকা সাহিত্য পরিষদ। আমি মনে করি, ঢাকা সাহিত্য পরিষদ সেই ব্রিজ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।"
বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হক বলেন, "ঢাকা সাহিত্য পরিষদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে চলেছে। এরই মধ্যে বরেণ্য কবি রাজেশ্রীর নেতৃতে ঢাকা সাহিত্য পরিষদ এর কলকাতা কমিটির কাজ শুরু করেছে।"
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি কবি সৌমিত্র দেব এবং গবেষক ও অনুবাদক কে. এম আব্দুল মমিন ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আহ্কাম উল্লাহ্ নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হক, নির্বাহী সভাপতি হিসেবে কবি জায়েদ হোসাইন লাকী, সাধারণ সম্পাদক লেখক ও প্রকাশক মেহেদী হাসান শোয়েব এবং সাংগঠনিক সম্পাদক কথাসাহিত্যিক আইভী মামুন-এর নাম ঘোষণা করেন। এরপর কমিটির বাকি সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন নবনির্বাচিত নির্বাহী সভাপতি কবি জায়েদ হোসাইন লাকী।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন