জিবিনিউজ24ডেস্ক//
শিরোনাম দেখে ভ্রু কুঁচকে বসতে পারেন বৈকি! সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে একটা ৫-০ জয়ই তো! এ আর এমন কী? আনহেল ডি মারিয়ার জোড়া গোল, লিওনেল মেসি, ইউলিয়ান আলভারেজ, হোয়াকিন কোররেয়াদের লক্ষ্যভেদ... যে দলের কাছে প্রত্যাশাটা বিশ্বজয়ের, র্যাঙ্কিংয়ের ৭০তম অবস্থানে থাকা দলের বিপক্ষে এমন একটা পারফরম্যান্স তো প্রত্যাশিতই ছিল!
আলভারেজের গোলে শুরু। প্রতি আক্রমণে উঠে এসে একেবারে শেষ মুহূর্তে মেসির স্কয়ার, যা থেকে সহজ এক গোল ম্যানসিটি স্ট্রাইকারের। এরপর দৃশ্যপটে ডি মারিয়া। মার্কোস আকুনইয়ার দারুণ এক ক্রস বক্সের ডান পাশে পেয়েই কামান দাগালেন ফারপোস্টে, আমিরাত গোলরক্ষককে হতভম্ব করে বলটা ঢুকল জালে।
ম্যাচের বয়স যখন ৩৬ মিনিট, ডি মারিয়া আরও একবার উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিলেন আকাশী-সাদাদের। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের পাস থেকে আমিরাত রক্ষণ ভেঙে ঢুকলেন প্রতিপক্ষ বিপদসীমায়, ফাঁকা পোস্টে জড়ালেন জালে।
এতক্ষণ আর্জেন্টিনা গোল উৎসব করছিল বটে, তবে মেসির গোল ছাড়া যেন উৎসবটা কিছুতেই পূর্ণতা পাচ্ছিল না। মেসি সেই পূর্ণতাটা দিলেন ম্যাচের ৪৪ মিনিটে। ডি মারিয়ার পাস পেয়েই ভাঙলেন আমিরাত রক্ষণ, এরপর দুর্বল ডান পায়ে করলেন গোল!
বিরতির পর কোচ স্ক্যালোনি খানিকটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালালেন দলের ওপর, প্রথাগত ৪-৩-৩ ছক ভেঙে দলকে খেলালেন ৩-৫-২ ছকে। দলও একটু রক্ষণাত্মক হলো, গোল উৎসবেও যেন একটু ভাটা পড়ল। একটা গোল এলো অবশ্য। ক্লাব মৌসুমের একটা বড় সময় বেঞ্চে থেকে কাটানো রদ্রিগো ডি পলের যোগান থেকে গোলটা করলেন হোয়াকিন, স্কোয়াড ঘোষণার আগেও যাকে দলে জায়গা দেওয়া নিয়ে খানিকটা দ্বিধায় ছিলেন আর্জেন্টিনা বস। আলবিসেলেস্তেরা ম্যাচটা জিতল ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে। জয়যাত্রাটা তাতে উন্নীত হলো ৩৬ ম্যাচে।
সব ঠিক আছে, কিন্তু এখানে স্বপ্ন দেখার সাহস নতুন করে এলো কোত্থেকে? এলো, সে স্বপ্নটা দেখালেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, হোয়াকিন কোররেয়ারা। জিওভানি লো চেলসো নেই চোটের কাটায় পড়ে, তার জায়গাটা যে পূরণ সম্ভব নয় তা কোচ স্ক্যালোনি জানিয়েছেন আগেই, আরও বললেন সেরা বিকল্প দিয়ে সে শূন্যতা ঢাকবার চেষ্টার কথা। সে জায়গাটা ম্যাক অ্যালিস্টার না এনজো ফের্নান্দেজ নেবেন, তা নিয়ে ছিল দ্বিধা, শেষমেশ এনজোর তারুণ্যের চেয়ে অ্যালেক্সিসের অভিজ্ঞতার দিকেই হাত বাড়ালেন স্ক্যালোনি। গোটা ম্যাচে মাঠ দাপিয়ে, রক্ষণচেরা পাসে গোলের জোগান দিয়ে অ্যালেক্সিস জানালেন, কাজটা নেহায়েত মন্দও করবেন না হয়ত। ইউলিয়ান আলভারেজ, হোয়াকিন কোররেয়ারা গোল করে জানালেন, সুযোগ কাজে লাগাতে তারাও পারেন ভালোই।
আর যাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি আশা? সেই মেসি, ডি মারিয়ারা? মেসি গোল করলেন, করালেন... জানান দিলেন, ক্লাবের ফর্মটা জাতীয় দলেও টেনে আনতে তৈরি তিনি। অবিশ্বাস্য এক ভলি আর দারুণ ড্রিবলে ‘ম্যারাডোনাএস্ক’ গোল দুটোয় ডি মারিয়াও কোচ স্ক্যালোনিকে আশ্বাস দিলেন, চোট সারিয়ে এসে ফর্মে ফিরে গেছেন।
২০১৯ কোপার পর থেকে হার নেই, ২০২১ কোপা জয়, টানা ৩৬ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা... লিওনেল স্ক্যালোনির আর্জেন্টিনাকে নিয়ে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। তার সঙ্গে যদি যোগ হয় এমন এক ছন্দ, তখন সে আলোচনা না বেড়ে যায় কোথায়? বেঞ্চের শক্তির সঙ্গে প্রাণভোমরাদের এমন পারফরম্যান্স তাই আর্জেন্টিনাকে দিলো নতুন স্বপ্ন দেখার সাহসই।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন