পশ্চিমাদের ঠেকিয়ে দিল চীন-ভারত

জিবিনিউজ24ডেস্ক//  

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এবারের জি-২০ সম্মেলনে বিশ্ব অর্থনীতি এবং বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের ওপর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ছিল আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয়।

পশ্চিমের দেশগুলো চেয়েছিল, জি-২০ সম্মেলন থেকে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের বিরুদ্ধে কঠোর বিবৃতি হোক। কিন্তু ভারত ও চীন রাশিয়ার সমর্থক, তারা সম্মত না হলে এমন বিবৃতি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। 

জি-২০ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্পষ্ট করে দেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চীন উদ্বিগ্ন, যথাসম্ভব শিগগিরই এর নিষ্পত্তি চায়। 

গত কয়েক মাসে রাশিয়া কয়েক বার ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে অস্পষ্ট বিবৃতি দিয়েছিল, সরাসরি সে সম্ভাবনা খারিজ করেনি। শি কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান। 

সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছিলেন যুদ্ধের উপযুক্ত সময় এটা নয়। কয়েক মাস ধরেই ভারত যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় ফেরার কথা বলে আসছে। 

সার্বিক পরিস্থিতি ঘিরে বালিতে ভারতীয় কূটনীতিকদের বেশ খানিকটা ভারসাম্যের খেলা দেখাতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, জি-২০ বৈঠকের সম্মিলিত বিবৃতি কঠোরভাবে ইউক্রেন-যুদ্ধের নিন্দা করেছে, বিশ্ব-অর্থনীতিতে তার প্রতিকূল প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছে, কিন্তু তার জন্য রাশিয়াকে প্রকারান্তরে দায়ী করলেও সরাসরি নিন্দা করেনি। 

জি-২০ সদস্য দেশগুলো জাতিসংঘে রাশিয়ার যে সব সমালোচনা করেছিল, সেগুলোকেই বিবৃতিতে উদ্ধৃত করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। জি-২০ প্রধানত অর্থনৈতিক বিষয় আলোচনার মঞ্চ, নিরাপত্তার প্রসঙ্গের জন্য নয়, এই যুক্তিতে সংঘাত এড়ানো হয়েছে। 

রুশ প্রেসিডেন্ট অবশ্য নিজে আসেননি এ সম্মেলনে, রাশিয়ার পক্ষে সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

এ বছর ভারত জি-২০ জোটের প্রেসিডেন্ট পদ গ্রহণ করল ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে, ২০২৩ সালের শীর্ষ সম্মেলন হবে দিল্লিতে। 

নানা সংঘাত সত্ত্বেও বিশ্ব-অর্থনীতি ও রাজনীতিতে জি-২০ জোটের গুরুত্ব অপরিসীম। এখন জি-২০ দেশগুলির মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের মোট উৎপাদনের আশি শতাংশ উৎপন্ন করে এই দেশগুলো, বিশ্ব বাণিজ্যের পঁচাত্তর শতাংশ এদেরই দখলে এবং বিশ্বের জনসংখ্যার ষাট শতাংশ এই সব দেশে বাস করে। 

রাশিয়াকে ‘একঘরে’ করে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলো। ভারত আর চীনের অবস্থান ছিল ভিন্ন— তারা যুদ্ধ সমর্থন না করলেও, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট করতে চায়নি। 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন