জিবিনিউজ24ডেস্ক//
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের দেশগুলির পক্ষে যে একা প্রতিরক্ষা মজবুত করা সম্ভব নয়, সেই বিশ্বাস আরো বাড়ছে৷ তাই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আরো পারস্পরিক সহযোগিতার পথে চলতে চায় কিছু দেশ৷ সামরিক জোট ন্যাটোর রক্ষাকবচ সত্ত্বেও বাড়তি পদক্ষেপের প্রয়োজন বোধ করছে এই দেশগুলি৷ ইউক্রেনে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর ক্ষেত্রেও এমন সমন্বয় ও সহযোগিতা দেখা যাচ্ছে৷ সেখানে সোভিয়েত আমলের ট্যাংক পাঠিয়ে পূর্ব ইউরোপের কিছু দেশ জার্মানি থেকে বিকল্প সাঁজোয়া গাড়ি পাচ্ছে৷
এবার ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডের আকাশসীমা সুরক্ষায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে জার্মানি৷ গত সপ্তাহে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের ঘটনার পর ভবিষ্যতে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত হামলা এড়াতে পেট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কাজে লাগতে পারে বলে জার্মান সরকার মনে করছে৷ ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থায় সমস্যাই গত সপ্তাহের ঘটনার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে৷
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট রোববার (২০ নভেম্বর) এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই প্রস্তাবের উল্লেখ করেন৷ উল্লেখ্য, জার্মানি এর আগে ইউরোফাইটার বিমানের সাহায্যে পোলিশ সীমান্তে টহলদারির প্রস্তাবও দিয়েছিল৷
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে সামরিক জোট ন্যাটো পূর্ব ইউরোপের আকাশসীমা আরো নিরাপদ করার জন্য পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে৷ অক্টোবর মাসে জার্মানির নেতৃত্বে প্রায় ১২টি ন্যাটো সদস্য দেশ যৌথভাবে একাধিক স্তরের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম গড়ে তোলার উদ্যোগ শুরু করেছে৷ শীতল যুদ্ধের সময়ে জার্মানিতে ৩৬টি প্যাট্রিয়ট ইউনিট মোতায়েন ছিল৷ বর্তমানে সেই সংখ্যা ১২, যার মধ্যে দুটি স্লোভাকিয়ায় মোতায়েন রয়েছে৷
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তাই যৌথ সুরক্ষার উপর জোর দিচ্ছে জার্মানি৷ তবে ফ্রান্সের মতো ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পরমাণু শক্তিধর দেশকে বাইরে রেখে জার্মানির এমন উদ্যোগ নিয়ে বিতর্ক চলছে৷ ইসরাইল অথবা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা কেনার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে৷ তবে অন্যান্য প্রতিরক্ষা প্রকল্পে ফ্রান্সের সঙ্গেই সহযোগিতা করছে জার্মানি৷
শুধু পোল্যান্ড নয়, স্লোভাকিয়া ও বাল্টিক দেশগুলির আকাশসীমা সুরক্ষা আরো মজবুত করতে হবে বলে মনে করেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী লামব্রেশট৷ ইউক্রেন ও রাশিয়ার সীমান্তের দেশগুলির জন্য এমন বাড়তি পদক্ষেপ অবিলম্বে প্রয়োজন বলে মনে করছে জার্মানি৷ মোটকথা ন্যাটো যাতে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে যাবতীয় পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষে অবস্থান করছে জার্মানি৷ তবে সেই লক্ষ্যে সব দেশকে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে বলে মনে করেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী৷
জার্মানভিত্তিক কোম্পানি রেথিওন-এর প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে আক্রমণকারী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার জন্য।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন