প্রয়োজন মেটাতে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করছেন আফগানরা

জিবিনিউজ24ডেস্ক//  

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা আগে থেকেই নাজুক। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান পুনরায় ক্ষমতা দখল করার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এখন নিজেদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। শোনা যাচ্ছে, শীতের আগে ঘর উষ্ণ রাখার সরঞ্জাম কিনতে ঘরের অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন আফগানরা। খবর দ্য খামা প্রেসের।

আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্যকারী সংস্থা রেডক্রসের অপারেশন্স ডিরেক্টর মার্টিন শুপ জানিয়েছেন, মধ্যবিত্ত আফগান পরিবারগুলো মৌলিক খাদ্য চাহিদার মাত্র ৮২ ভাগ পূরণ করতে সক্ষম। তিনি আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

বার্তাসংস্থা এপির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রেডক্রসের এ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রয়োজন মেটাতে আমরা দেখছি আরও আফগান জিনিসপত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাদের ঘর উষ্ণ রাখার সরঞ্জামের সঙ্গে বেশি দামে খাবার ও অন্যান্য পণ্য কিনতে হচ্ছে।’

তিনি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটিতে প্রয়োজনীয় সাহায্য সময়মতো পৌঁছাচ্ছে না। খাদ্য সহায়তার ওপর যেন কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা না থাকে সেটি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সৈয়দ মাসুদ নামে আফগানিস্তানের একজন অর্থনীতিবীদ বলেছেন, ‘ব্যাংক এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের মাধ্যমে এই অর্থনৈতিক দুরাবস্থা কাটানো সম্ভব।’

মীর সিকিব মীর নামে অপর একজন অর্থনীতিবীদ বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের ব্যাংগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোর লেনদেনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। যা অর্থনীতিকে আরও খারাপ করে দিচ্ছে।’

তিনি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে যেসব মানবিক সংস্থা কাজ করছে তারাও ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারছে না। এ বিষয়টি মানবিক সাহায্যে প্রভাব ফেলছে।

আফগানিস্তানের দোকানি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনছেন। এর বাইরে কোনো কিছু কিনছেন না। তাদের আসলে সেই ক্রয় ক্ষমতাই নেই।

এর আগে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছিল, আফগানিস্তানের অর্ধেক মানুষ মানবিক সাহায্যের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। দেশটির প্রতি দু’জনের মধ্যে একজন মানুষ জানেন না, একবেলা খাওয়ার পর পরের বেলা খাবার পাবেন কিনা।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান পুনরায় ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের বেসরকারি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেঁচা বিক্রি ও ব্যবসা কমে যাওয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রায় অর্ধেক কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। যা বেকারত্ব বৃদ্ধিসহ পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন