আবুল কাশেম রুমন,সিলেট ||
সিলেটৈর কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ শর্তকতা ও নজরাদারী জোরদার কার হয়েছে। ঢাকার আদালত পাড়া থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের সারা দেশে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এ দিকে সিলেটের কারাগারেও বিশেষ সতর্কাবস্থায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ। নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কারারক্ষিদের দায়িত্ব পালনেও আনা হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। কারাবন্দিরা যাতে কোন গোপন বৈঠক, শলাপরামর্শ করতে না পারে সেজন্যও বাড়তি নজর রাখা হয়েছে।
কারা অধিদফতর জঙ্গিদের থাকা, খাওয়া, চলাফেরায় নজরদারি আগের যে কোন সময়ের তুলনায় বাড়িয়েছে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা জঙ্গিসহ ফাঁসির আসামিদের শিকল (ডান্ডাবেড়ি) পরিয়ে রাখা হচ্ছে।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল জানান, বর্তমানে কারাগারে ২ হাজার ৬৫০ জন বন্দি রয়েছে। এর মধ্যে জঙ্গিসহ ৯১ জন ফাঁসির আসামি রাখা হয়েছে নতুন এই কারাগারের কনডেম সেলে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় মামলার হাজিরা দেওয়ার জন্য জঙ্গিদের ৩ জন ইতোমধ্যে এই কারাগার থেকে অন্যত্র নেওয়া হয়েছে। তবে অধিক নিরাপত্তায় এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে জঙ্গিদের আনা হয়ে থাকে। ঢাকার ঘটনার পর জঙ্গিদের হাজির করার ক্ষেত্রে অন্যত্র যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে বর্তমানে নতুন ও পুরাতন দু’টি কারাগার রয়েছে। ১৭৮৯ সালে আসামের কালেক্টর জন উইলিশ সিলেট কারাগার প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ সালের ৩ মার্চ কারাগারটি কেন্দ্রীয় কারাগারে উন্নীত করেন। এই কারাগারের মোট ২৪ দশমিক ৭৬ একর জায়গার মধ্যে কারাভ্যন্তর আছে ১০ দশমিক ৫০ একর এবং কারাগারের বাহির ১৪ দশমিক ২৬ একর। তন্মধ্যে দুই দফায় ১২১ শতাংশ জমি সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক দখলকৃত ছিল।
২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক সিলেট পুরাতন কারাগারকে ‘সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২’হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে এই কারাগারে ২৭ জন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছে। এসব বন্দিদের নিরাপত্তা ও কারাগারের রক্ষণাবেক্ষনের জন্য ৪৭ জন কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন।
এদিকে, ২২৯ বছরের পুরাতন কারাগারে বন্দির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২ হাজার বন্দি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এবং ভবিষ্যতে আরও ২ হাজার বন্দির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ রেখে সিলেট বাদাঘাটে নির্মিত হয় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-১। ২০১৮ সালের পহেলা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কারাগারের শুভ উদ্বোধন করেন। ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারি এই কারাগারে বন্দী স্থানান্তর করা হয়।
কারা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ দশমিক ৩৬ একর ভূমিতে নির্মিত এই কারগারে সীমানা প্রাচীরের দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৭২৯ আরএফটি। সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা সমতল ভূমি থেকে হতে ৫ ফুট উচু। প্যারামিটারে দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৬২৮ আরএফটি। আর প্যারোমিটারে ওয়ালের উচ্চতা : সমতল ভূমি হতে ১৮ ফুট উচু। তন্মধ্যে কারাভ্যন্তরে ১৬ একর, বহরিাংশের ভূমির পরিমাণ ১৫ দশমিক ৩৬ একর। কারাগারে মোট ৫৯টি স্থাপনার স্থাপনার মধ্যে কারাভ্যন্তর ২৭টি এবং বহিরাংশে ৩২টি। এই কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা মোট ২ হাজার এর মধ্যে হাজতী ১ হাজার ৫১০ জন ও কয়েদী ৪৯০ জন। হাজতিদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৪৪০, নারী ৭০ জন। কয়েদিদের মধ্যে পুরুষ ৪৬০ এবং নারী ৩০ জন। এছাড়া অনুমোদতি জনবল ৪৫২ জনের স্থলে রয়েছে ৩৭৮ জন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন