নিষিদ্ধ টুইটার অ্যাকাউন্টের জন্য ‘ক্ষমা’ ঘোষণা মাস্কের

মাসখানেক আগে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট টুইটার কিনেছিলেন ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। আর এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এছাড়া চাকরি হারানো কর্মীরা মাস্কের কঠোর চেহারাও যেন এরইমধ্যে দেখে ফেলেছেন।

আর এবার মার্কিন এই ধনকুবেরের ‘উদারতার’ সাক্ষী হলো সবাই। সোশ্যাল মিডিয়ার জায়ান্ট এই প্লাটফর্মে অতীতে নিষিদ্ধ বা স্থগিত হওয়া বহু অ্যাকাউন্টের জন্য ‘ক্ষমা’ ঘোষণা করেছেন মাস্ক। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোপূর্বে টুইটারে নিষিদ্ধ বা স্থগিতকৃত বহু অ্যাকাউন্টকে পুনরায় এই প্লাটফর্মে ফেরত দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির নতুন মালিক ইলন মাস্ক। মূলত অনানুষ্ঠানিক জরিপে অংশ নেওয়া ব্যবহারকারীদের বিশাল অংশ এই পদক্ষেপের পক্ষে ভোট দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার এ কথা ঘোষণা করেন তিনি।

মূলত ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত ইচ্ছার সাপেক্ষে, নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলোর জন্য এই পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং বাকিদের জন্য নয়।

নিষিদ্ধ অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে ভোটাভুটি বা জরিপের প্রতিক্রিয়ায় এক টুইট বার্তায় মাস্ক বলেন, ‘জনগণ সাড়া দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে ক্ষমার কাজ শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভক্স পপুলি, ভক্স দেই’। মূলত এটি একটি ল্যাটিন প্রবাদ। যার অর্থ- ‘মানুষের কণ্ঠই ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর’। এই প্রবাদটি অন্যান্য টুইটার পোল সম্পর্কে কথা বলার সময়ও ব্যবহার করেছেন মাস্ক।

মাস্ক জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে বুধবারের ভোটাভুটিতে অংশ নিয়েছেন ৩.১৬ মিলিয়ন উত্তরদাতা। এর মধ্যে ৭২.৪ শতাংশ বলেছেন, স্থগিত অ্যাকাউন্টগুলোকে টুইটারে ফেরত দেওয়া উচিত যতক্ষণ না তারা আইন ভঙ্গ না করে বা ‘গুরুতর স্প্যামে’ জড়িত না থাকে।

মূলত জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টুইটারে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুনর্বহাল করার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ও মাস্ক একই ধরনের ‘হ্যাঁ/না’ ভোটের ব্যবস্থা করেছিলেন।

ওই জরিপের পর গত শনিবার সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের টুইটার অ্যাকাউন্ট সচল করে দেওয়া হয়। সপ্তাহখানেক আগের ওই জরিপে ১৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী (ট্রাম্পের) বিতর্কিত অ্যাকাউন্ট পুনঃস্থাপন করা হবে কিনা তা নিয়ে ভোট দিয়েছেন। ওই জরিপে ৫১.৮ শতাংশ অ্যাকাউন্ট পুনঃস্থাপন করার পক্ষে এবং ৪৮.২ শতাংশ বিপক্ষে ভোট দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও সহিংসতা চালাতে সমর্থকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে নিষিদ্ধ হন ট্রাম্প। ট্রাম্প সমর্থকদের সেদিনের সেই ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। এই হামলার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভিত কেঁপে উঠেছিল।

এই ঘটনার পর ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হওয়া ওই অ্যাকাউন্টটিতে ট্রাম্পের প্রায় নয় কোটি ফলোয়ার ছিলেন। কিন্তু ক্যাপিটল হিলে হামলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প উসকানি দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে টুইটার কর্তৃপক্ষ বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধ করে দেয়।

এএফপি বলছে, টুইটারে এই ধরনের জরিপে অংশ নেওয়া সকল ব্যবহারকারীর জন্য উন্মুক্ত। আর তাই অবৈজ্ঞানিক এবং সম্ভাব্য জাল ও ভুয়া অ্যাকাউন্ট এতে অংশ নেওয়াকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।

এছাড়া টুইটারে ইলন মাস্কের ফলোয়ারের সংখ্যা ১১৮ মিলিয়ন। আর তাই টুইটারের ৪৫০ মিলিয়ন মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীদের অনেকেই হয়তো মাস্কের জরিপের এই প্রশ্নটি দেখেননি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন