চীন-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের স্বর্ণযুগ শেষ হয়ে গেছে: সুনাক

জিবিনিউজ24ডেস্ক//  

চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের তথাকথিত ‘স্বর্ণযুগ’ শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। একইসঙ্গে এশিয়ার পরাশক্তি এই দেশটির প্রতি যুক্তরাজ্যের অবস্থানকে ‘বিকশিত’ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।

বৈদেশিক নীতি নিয়ে দেওয়া নিজের প্রথম বক্তৃতায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সুনাকের মতে, (চীনের সঙ্গে) আগের দশকগুলোতে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিল ‘নিষ্পাপ’। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

নিজের বক্তৃতায় সুনাক বলেন, যুক্তরাজ্যকে এখন প্রতিযোগীদের প্রতি ‘শক্তিশালী বাস্তববাদ’ দিয়ে লক্ষ্য পূরণের চিন্তাভাবনা প্রতিস্থাপন করতে হবে। তবে তিনি ‘ঠান্ডা যুদ্ধের মতো অবস্থার’ বিরুদ্ধে সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেন, চীনের বৈশ্বিক তাৎপর্যকে উপেক্ষা করা যাবে না।

বিবিসি বলছে, ঋষি সুনাক গত মাসে টোরি নেতা এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চীনের প্রতি যুক্তরাজ্যের অবস্থান আরও কঠোর করার জন্য চাপের মুখোমুখি হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে লন্ডনে লর্ড মেয়রের ভোজসভায় সুনাকের এই বক্তব্য এমন সময়ে সামনে এলো যখন কঠোর কোভিড লকডাউন আইনের বিরুদ্ধে চীনে বিক্ষোভ চলছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং গত রোববার সাংহাইতে বিক্ষোভের সংবাদ কভার করার সময় বিবিসির একজন সাংবাদিককে আটক করে চীনা কর্তৃপক্ষ। গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ ওই সাংবাদিককে মারধর ও লাথি মারে এবং মুক্তি পাওয়ার আগে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।

এই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী সুনাক এদিন দেশটির ব্যবসায়ী নেতা এবং পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞদের বলেন, প্রতিবাদের মুখে চীন ‘বিবিসি সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করাসহ আরও দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্বীকার করি যে, চীন আমাদের মূল্যবোধ এবং স্বার্থের জন্য একটি পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এবং চ্যালেঞ্জ আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে যখন এটি আরও বৃহত্তর কর্তৃত্ববাদের দিকে এগিয়ে যায়।’

পরে ঋষি সুনাক বলেন, যুক্তরাজ্য-চীন সম্পর্কের ‘স্বর্ণযুগ’ ‘শেষ হয়ে গেছে’ এবং পশ্চিমের সাথে আরও বাণিজ্য চীনকে রাজনৈতিক সংস্কারের দিকে নিয়ে যাবে, এমন ধারণাও কার্যত শেষ হয়ে গেছে।

বিবিসি বলছে, যুক্তরাজ্য-চীন সম্পর্কের ‘স্বর্ণযুগ’ বলতে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের অধীনে বেইজিংয়ের সঙ্গে দেশটির ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ককে বোঝানো হয়ে থাকে। তবে ক্যামেরুনের পদত্যাগের পর লন্ডন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

তবে এরপরও ঋষি সুনাক জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক প্রেক্ষপটে চীনের তাৎপর্যকে উপেক্ষা করতে পারি না। বিশেষ করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোতে’।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানসহ মিত্র দেশগুলোকে সাথে নিয়ে ‘কূটনীতি ও নানা ক্ষেত্রে তীব্র এই প্রতিযোগিতা চালিয়ে যেতে’ কাজ করবে যুক্তরাজ্য। তার ভাষায়, ‘এর অর্থ হলো- দৃঢ় বাস্তববাদের সাথে আমাদের প্রতিযোগীদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।’

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন