জিতু আহমদ,ওসমানীনগর ||
“ঐ দেখা যায় তাল গাছ ঐ আমাদের গাঁ, ঐখানেতে বাস করে কানাবগীর ছায়” তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে- বইয়ের পাতায় কবিতা থাকলেও বাস্তবে আজ কোন মিল নেই।সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষাকারী তাল গাছ।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ বান্ধব গাছ তাল। তাল পাতা দিয়ে ঘর, হাতপাখা, তালপাতার চাটাই, মাদুর, আঁকবার পট, লিখবার পুঁথি, পুতুল ইত্যাদি বহুবিধ সামগ্রী তৈরি হয়ে থাকে। এমনকি তালের কাট দিয়ে বাড়ি, নৌকা, হাউস বোট ইত্যাদি তৈরি হয়। কিন্তু কালের আবর্তে উপজেলার গ্রামা ল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের এ তালগাছ। তালের ফল এবং বীজ দুই-ই বাঙ্গালির জন্য সুস্বাধু খাদ্য। তাল গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে গুড়, পাটালি, মিছরি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাসিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জানা যায়, প্রায় ১৫-১৬ বছর আগেও গ্রামের রাস্তা-ঘাট, পুকুরপাড় ও মাঠের মধ্যে সারিসারি তালগাছ ছিল। আষাঢ় মাস আসার আগে থেকেই বাবুই পাখি বাসা বুনতে শুরু করতো। তখন কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত থাকতো পুরো গ্রাম। এখন হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি তালগাছ চোখে পড়ে। এখন আর মুখরিত হয়না কিচির-মিচির শব্দে গ্রামবাংলার জনপদ।বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতি হয়ে উঠছে বিরাগভাজন। সময় মতো বৃষ্টি না হওয়া, আবার অতিবৃষ্টি, কালো মেঘের বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা এতো বেশি যা ভাবিয়ে তুলছে। এ অবস্থায় তাল গাছ রোপণ, হেফাজত ও রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ প্রয়োজন।
স্থানীয় ব্যাবসাী প্রভাত চন্দ্র জানান, ২০-২৫ বছর আগে গ্রাম-অ লে তাল গাছের কদর ছিলো বেশি। আমরা আমাদের এলাকায় তালের নৌকা বানাতাম। এখন আগের মতো বড় বড় তালগাছ পাওয়া যায় না। বর্তমানে মানুষজন তাল গাছ কেটে ফেলে। কিন্তু নতুন করে কেউ আর রোপণ করে না। তাই খুবই কম এখন দেখা যায়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন