করোনা : চীনের হাসপাতালগুলোতে বয়স্ক রোগীদের উপচে পড়া ভিড়

জিবিনিউজ24ডেস্ক//  

সাম্প্রতিক করোনা সুনামিতে ব্যাপক দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে চীন। দেশটির বড় শহরগুলোর প্রায় সব হাসপাতাল বয়স্ক করোনা রোগীতে ভরে উঠেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।

চীনের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম শহর চংকিংয়ের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল চংকিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বয়স্ক রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। তাদের অধিকাংশকেই ব্রেদিং টিউবে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল।

হাসপাতালের একজন চিকিৎসক এএফপিকে বলেন, হাসপাতালের বেশ কয়েকজন ডাক্তার ও নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকায় বর্তমানে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

‘গত কয় দিনে যত রোগী হাসপাতালে তাদের প্রায় সব রোগীই বয়স্ক। হাসপাতালের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ডাক্তার ও নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়ে ছুটিতে থাকায় খুব চাপ যাচ্ছে আমাদের।’

চীনের লাখ লাখ বয়স্ক মানুষ এখনও করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেননি। ফলে চলতি ডিসেম্বরের শুরু থেকে দেশটিতে করোনার যে ঢেউ শুরু হয়েছে, তাতে বয়স্ক মানুষরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন।

চংকিং ‍হাসপাতালের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, গত ৪ দিন ধরে আর রোগী ভর্তি করার মতো কোনো জায়গা অবশিষ্ট নেই হাসপাতালে। এ কারণে ভর্তি হতে আসা রোগীদের বাধ্য হয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন তারা।

চীনের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র ও দেশটির বৃহত্তম শহর শাংহাইয়েও একই অবস্থা। প্রায় সব হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে রোগীদের চাপে পা ফেলার জায়গা নেই। ওয়ার্ডের শয্যা ও মেঝেতে জায়গা না পেয়ে অনেক রোগী হাসপাতালের টয়লেটের কাছাকাছি জায়গাগুলোতেও আশ্রয় নিয়েছেন।

সাংহাইয়ের বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, অসুস্থ বয়স্ক রোগীরা প্রায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছেন, ডাক্তার কিংবা নার্স কাছে গেলে সাড়া দেওয়ার মতো শারীরিক শক্তিও নেই বেশিরভাগের।

এই রোগীদের দেখাশোনা করতে (অ্যাটেন্ডেন্ট) তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক আছেন কোনো না কোনো আত্মীয় বা পরিচিতজন। এএফপি এমন কয়েকজন অ্যাটেনডেন্টের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাদের কেউ কথা বলেননি।

দম ফেলার অবসর নেই শ্মশানকর্মীদের

চীনের মৃতদেহ দাহ করার সংস্কৃতি প্রচলিত। একদিকে দেশটির হাসপাতালগুলোতে যেমন করোনা রোগীদের ভিড় উপচে পড়ছে, অন্যদিকে দেশটির শ্মশানকর্মীরাও কাজের ব্যস্ততায় দম ফেলার ফুরসৎ পাচ্ছেন না।

চংকিংয়ের সব শ্মশান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটির সামনেই গাড়ির দীর্ঘসারি। স্বজনরা মৃতদের দেহ সৎকারের জন্য সেসব গাড়িতে লাশ নিয়ে এসেছেন। মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য যেসব ফার্নেস ব্যবহৃত ফার্নেসগুলোর সামনেও ভিড় দেখা গেছে।

শ্মশানকর্মীদের ব্যস্ততা ও মৃতদের স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে শ্মশানের পরিবেশ। এএফপিকে শ্মশানকর্মী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আমাদের প্রত্যেককে ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। ব্যাপক চাপে আছি আমরা।’

‘যেসব মৃতদেহ আসছে, তাদের সবাই করোনায় মারা গেছেন কিনা— বলতে পারব না। কারণ একের পর এক মরদেহ আসছে, কে কী কারণে মারা গেছে— সেসব তথ্য নেওয়ার সময়ই পাচ্ছি না আমরা।’

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন