গোবিন্দগঞ্জে কৃতী সন্তানের মায়েরা পেলেন সম্মাননা

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা ||

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মিলনায়তনজুড়ে শুধু করতালির শব্দ। নানা বয়সী মানুষের ভিড়ে আলাদা করে চেনা যাচ্ছিল কৃতী সন্তানদের গর্বিত জননীদের। তাদের প্রায় সবার মুখে হাসি থাকলেও চোখের কোনায় মুক্তদানার মতো অশ্রুবিন্দু। এ দৃশ্য উপস্থিত মানুষের কাছে ছিল একেবারে নতুন। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে মা সম্মাননা-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত ‘আমার শ্রেষ্ঠত্বের কারণ আমার মা’ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই আনন্দময়তা ও আবেগের উচ্ছ্বাস সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। ৪৫ কৃতী সন্তানের জননীরা ছিলেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে।শুরুতে উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি শিক্ষক ও সংগীতশিল্পী তনু রায়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের প্রধান উপদেষ্টা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল লতিফ প্রধান, পৌর মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন, গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বসির আহমেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বাবুলাল চৌধুরী, উপদেষ্টা ঝুমা রায় ও শুভসংঘের জেলা সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ বিপ্লব।

এ সময় মোবাইলে ঢাকা থেকে যুক্ত হন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গাইবান্ধা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। কৃতীদের প্রশাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং শিক্ষার্থী পরিচয়ে চিহ্নিত করা হয়। তাদের রতœগর্ভা জননীদের একে একে মঞ্চে ডেকে উত্তরীয়, ক্রেস্ট, উপহারসামগ্রী দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। শুরুতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুস সবুর মন্ডলের জননী মোছা. হাসনাহেনা বেগম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক সুমনা সরকারের মা গায়িত্রী ভট্টাচার্যকে সম্মাননা দেওয়ার সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

হাসনাহেনা বেগম তার সন্তানের বেড়ে ওঠা ও সাফল্যের গল্প বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, এভাবে মাকে ভালোবেসে সম্মাননা নিতে যারা ডেকেছেন, তারা সবাই যেন ভালো থাকেন। স্বামীর সহযোগিতায় কিভাবে সন্তানদের মানুষ করেছেন, সেই লড়াইয়ের আভাসও দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই সম্মান শুধু আমার নয়, পৃথিবীর সব মায়ের প্রাপ্য। ’এফসিপিএস করা চিকিৎসক ডা. দিয়ানুল ডালিয়া প্রধানের মা রেহেনা খাতুন বলেন, ‘আমি শুভসংঘের এই আয়োজনে খুশি। ’ জীবনযুদ্ধের গল্পের চেয়ে তিনি তার মেয়ের ধারাবাহিক সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন বলেন, অনন্য এই আয়োজন। মাকে সম্মান জানানোর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। একজন মা তার সন্তানকে যেভাবে সার্বক্ষণিক পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করে তোলেন তার কোনো মূল্য হয় না। তাকে শুধু ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাই দেওয়া যায়।

উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ প্রধান বলেন, কালের কণ্ঠ শুভসংঘ গঠনের জন্য প্রথম সভায় দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শুভ কাজে তরুণদের অনুপ্রাণিত করার কথা বলেছিলেন। তার কথায় তরুণ বন্ধুরা বিশাল ও মানবিক এই আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য প্রমাণ করেছে।

উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি তনু রায় বলেন, গত এক মাসের নিরলস চেষ্টায় গোবিন্দগঞ্জের কৃতী সন্তানদের পরিচয় বের করে তাদের বাড়িতে গিয়ে জননীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিশাল এই আয়োজনের পেছনে কেন্দ্রীয় পরিচালক, কমিটির কর্মকর্তাদের প্রেরণাই ছিল মূল শক্তি। শুভসংঘের স্থানীয় বন্ধুদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।সমগ্র অনুষ্ঠান সমন্বয় করেন শুভসংঘের সংগঠক মেহরাব জাহিদ, সিহাব আকন্দ, সহসভাপতি অয়ন সুলতান, সাজ্জাদ হোসেন, রাশিদ তাকি রাশু শাহদাত আলম স্বাধীন, আজমাইন মাহতাব মিলন, সিয়াম সিদ্দিক, আহসানুল হক, জুয়েল প্রধান, আবু সাঈদ নাদিম মাহমুদ নিবিড়, অর্কিক সুলতান, দেলোয়ার হোসেন দ্বীপু, এস এম শাকিব শরীফ শান্ত, ইরফানুল হক স্বপ্নীল, সারোয়ার আহম্মেদ বঁধন, আহমেদ শাহরিয়ার জিহাদ, মোহাম্মদ মুন, শেখ রিশাদসহ অন্যরা।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন