মোঃ আব্দুল্যাহ আল মামুন ||
দক্ষ জনসম্পদ গঠন, জাতীয় উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন এবং গতিশীল ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে গুণগত শিক্ষার বিকল্প নেই। এছাড়া, ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে নৈতিকতা, মানবিকতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সাংস্কৃতিক চিন্তাধারা ও সামাজিক মূল্যবোধকে উজ্জীবিত করার মূল হাতিয়ার হলো শিক্ষা। আর গুণগত ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা হলো পরবর্তী শিক্ষার মূল ভীত। সে কারণে সুনাগরিক সৃষ্টি এবং প্রগতিশীল ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সকল শিশুর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষার মূল কাজ হলো শিশুর সার্বিক উন্নয়ন এবং শিশুর উন্নয়ন অর্থ হলো শিশুর সহজাত সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সামাজিক, জ্ঞানভিত্তিক, সাংস্কৃতিক, আবেগীয় ও শারিরীক দক্ষতা বৃদ্ধি করা। প্রাথমিক অবস্থায় গুণগত, মানসম্মত ও সঠিক শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে এতটুকু ছাড় দেয়া মানে, সমৃদ্ধ জাতি গঠনে ঠিক ততটুকুই পিছিয়ে পড়া।
স্বাধীনতাপূর্বকালে প্রাথমিক শিক্ষা খাত ছিল অবহেলিত। ১৯৭০ এর ঐতিহাসিক নির্বাচনের পূর্বে এক টেলিভিশন ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারেনা”। যার প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে রচিত সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতি অংশে, যেখানে শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করে প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষার গুরত্ব বিবেচনা করেই জাতির পিতা বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রযাত্রার শুভ সূচনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে দেশে প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করেন এবং এর পরপরই প্রাথমিক শিক্ষা প্রসারে জোর দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায়, প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে ২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৯৩ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। এর পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ও আধুনিকীকরণে বিভিন্ন বাস্তবমুখী ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শিক্ষা নীতি ২০১০ প্রনীত হয়। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত আরো পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে চার দফার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন কর্মসূচির গ্রহণ। বছরের প্রথমদিনে শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া এই কর্মসূচির আওতায় অসাধারণ উদ্যোগ। এই কর্মসূচির অন্যান্য উদ্যোগগুলো হলো শতভাগ উপবৃত্তি কার্যক্রম, অনগ্রসর এলাকায় স্কুল ফিডিং চালু, সরকারি বিদ্যালয়ে দপ্তরি-কাম-নৈশ্য প্রহরী নিয়োগ, ক্ষুদে ডাক্তার, স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠন, ই-মনিটরিং এর মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিদর্শন ইত্যাদি। শিশু শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটাতে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু ও সকল বিদ্যালয়ে সুস্বজ্জিত প্রাক-প্রাথমিক শেণিকক্ষ প্রস্তুত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকের নতুন পদ সৃষ্টিসহ প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ ও পুল শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য বাড়তি ৩৭ হাজার ৭২৬ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শতভাগ শিশুর বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা, ঝরে পড়ার হার প্রায় শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা, ছাত্র ও ছাত্রীদের মধ্যে সমতা আনা, নতুন শিক্ষাক্রমে নতুন পাঠ্য বই ছাপানো, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চালু, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ নানা ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। প্রাইমারি এডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (পিইডিপি-৪), জিপিএস, এনএনজিপিএস প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে নতুন ভবন, ওয়াস ব্লক, বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ ও নিরাপদ খাবার পানির উৎস স্থাপনসহ ব্যাপক ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। শিক্ষার প্রসারের সাথে সাথে এখন লক্ষ্য দিতে হবে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের দিকে। ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধার পাশাপাশি সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হলো যোগ্য, দক্ষ ও পেশাদারি মনভাবাপন্ন শিক্ষক। নিবেদিতপ্রাণ দক্ষ শিক্ষকগণই পারে আজকের শিশু শিক্ষার্থীদের আগামীর যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে, যারা আগামীতে এ দেশের নেতৃত্ব দিবে।
বর্তমান সরকারের নানামুখী বাস্তবধর্মী ও কার্যকরী পদক্ষপের কারণে দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় করোনা পূর্ববর্তী গত কয়েক বছরে বেশ অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রকোপে অন্যান্য সকল খাতের সাথে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা গভীর সংকটে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২০ সালের ১১ মার্চ কোভিড-১৯ কে একটি বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষনা করে। বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয় ৮ মার্চ ২০২০। সে প্রেক্ষিতে ১৭ মার্চ ২০২০ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার নির্দেশ দেয় সরকার। কোভিড-১৯ এর সাথে লড়াই করে টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত হয় সকলে। পরবর্তীতে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেওয়া হলেও করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ২১ জানুয়ারি ২০২২ এ পুনরায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২ মার্চ ২০২২ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ এই বন্ধের ফলে ব্যাপকভাবে ব্যাহত ও ক্ষতিগ্রস্থ হয় সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা। ২০২১ সালে প্রকাশিত ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো এর এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কোভিড-১৯ এর কারণে বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। ফলে কোভিড পরবর্তী শিক্ষা খাতের বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবার অবকাশ রয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্পৃক্ততা, সম্মিলিত উদ্যোগ ও সমন্বিত প্রয়াস বাড়াতে হবে।
রূপকল্প ২০৪১ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ (এসডিজি) বাস্তবায়নের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ এর প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সকল শিশুর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা যা অর্জনে বাংলাদেশ দৃঢ় অঙ্গীকার করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫(ক) অনুচ্ছেদে অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয় ও চিকিৎসার পাশাপাশি শিক্ষাকে মৌলিক প্রয়োজন হিসেবে স্বীকৃত দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, শিক্ষা নীতি ২০১০, রুপকল্প ২০৪১ ও এসডিজি এর লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে সরকার প্রাথমিক শিক্ষায় বিপুল বিনিয়োগ করছে।
শিক্ষা ব্যবস্থাকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক নিয়ে তিন চাকা বিশিষ্ট বাহন বলা চলে। যেখানে সবথেকে গুরত্বপূর্ণ চাকাটি হলো শিক্ষক। সুতরাং, শিক্ষার উন্নয়নের মূলে রয়েছে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সমাজ। পেশাগত সুযোগ সবিধা বাড়িয়ে এবং শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আধুনিকীকরণ করে অধিকতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদান করা প্রয়োজন। শিক্ষকগণের চাকুরির শুরুতেই দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাঠদানে দক্ষ করার ব্যবস্থা নেওয়াও জরুরী। প্রত্যেক শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের কর্মদক্ষতার মান পরিমাপ করে জবাবদিহিতার আওতায় আনা যেমন জরুরী তেমনি কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার এ ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমান সরকার শিক্ষার মানোন্নয়নে যে কয়েকটি অসাধারণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার একটি হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীতকরণ। সহকারী শিক্ষকগণের বেতন স্কেলও এক ধাপ উন্নীত করা হয়। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকগণের বেতন গ্রেড ১১ এবং সহকারী শিক্ষকগণের বেতন গ্রেড ১৩। এছাড়া ৩৪ তম বিসিএস চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যারা ক্যাডার পাননি তাদের মধ্য হতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদমর্যাদায় নিয়োগ করা হয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং গুণগত শিক্ষার ধারা নিশ্চিত করতে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকার পর্যায়ক্রমে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ। সম্প্রতি নতুন করে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা হলো। সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকসহ পূর্বের বেশির ভাগ শিক্ষকের স্নাতক বা তদুর্ধ ডিগ্রি রয়েছে। এই সব উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকগণকে যথপোযুক্ত প্রশিক্ষণের দ্বারা পেডাগজিতে (শিশুদের পাঠদান পদ্ধতির বিজ্ঞান) দক্ষ করে তুলতে হবে। ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ ও বিশ্বের চাহিদা মাথায় রেখে আধুনিক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে দক্ষ শিক্ষক তৈরি করতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। শিক্ষক প্রশিক্ষণের মানও ইতোমধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষকগণকে পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, নিড বেইজড সাব ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ, আইসিটি প্রশিক্ষণ, প্রধান শিক্ষকগণকে লিডারশিপ প্রশিক্ষণ ও ইংরেজি বিষয়ে দক্ষ করতে সরকারি অর্থায়নে ব্রিটিশ কাউন্সিল কর্তৃক মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণসহ নানাবিধ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয় পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এসকল প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা শ্রেণি পাঠদানে যথাযথভাবে প্রয়োগ নিশ্চিত করা অতীব জরুরী।
প্রতিটি বিদ্যালয়ে ক্যাচমেন্ট এলাকাভিত্তিক শিশু শিক্ষা ও স্বাক্ষরতা জরিপ কার্যক্রম তদারকীর মাধ্যমে সকল বিদ্যালয় গমন উপযোগী শিশুদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্লাস্টারে দায়িত্বে থাকা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, এসএমসি কমিটির সদস্যদের সরেজমিন পরিদর্শন ও তদারকী বাড়াতে হবে। সম্মানিত শিক্ষক, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্যাচমেন্ট এলাকায় বিশেষ জরিপ চালিয়ে কোভিড-১৯ এর কারণে পিছিয়ে পড়া বা ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের তালিকা করে প্রয়োজনের নিরিখে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের শিশুদের প্রয়োজনে খাতা কলম, স্কুল ড্রেস বা করোনাকালীন বিশেষ আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ হলো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যথা সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়া এবং নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অবস্থান করা। যথাসময়ে উপযুক্ত প্রস্তুতি নিয়ে, নির্ধারিত পাঠের বার্ষিক পরিকল্পনা, দৈনিক পাঠ পরিকল্পনা ও উপকরণ নিয়ে পঠন প্রক্রিয়াকে শিশু শিক্ষার্থীদের নিকট আকর্ষনীয় করে তোলা এবং নিবেদিত প্রাণ হয়ে ও আন্তরিকতার সাথে পাঠদান করা সম্মানিত শিক্ষকগণের অন্যতম দায়িত্ব। প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে স্কুল লেভেল ইম্প্রুভমেন্ট প্ল্যান (স্লিপ), প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার উপকরণ ও শ্রেণিকক্ষ সজ্জিতকরণ, বিদ্যালয়ের মেইনটেইন্যান্স ও কন্টিজেন্সি বাবদ এবং স্কিমের আওতায় বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ নির্দেশনা অনুযায়ী যথা সময়ে নির্ধারিত খাতে বিধি-বিধান অনুসরণ করে ব্যয় নিশ্চিত করতে হবে। উল্লিখিত সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ ও পাঠদান প্রক্রিয়ার আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন আনা সম্ভব। উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করে নতুন নতুন শিক্ষা উপকরণ সংযোজনের মাধ্যমে শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম আকর্ষনীয় করা যায়। শ্রেণিকক্ষ পরিচ্ছন্ন ও সজ্জিত হলে এবং বিদ্যালয়ে আনন্দঘন সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত হলে শিশু শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে তদারকী কর্মকর্তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাণবন্ত ও আনন্দমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে তাদের সংগে বন্ধুসুলভ আচরণ করা, কোনো কারণেই ভয়ভীতি না দেখানো, সকল ক্ষত্রেই উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করা, পরীক্ষা ভীতি না দেখানো এবং শ্রেণি পাঠদানের ক্ষেত্রে শিশুবান্ধব বিভিন্ন শিখন উপকরণ ব্যবহার ও খেলার সামগ্রী প্রদান করার মত পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। শিশুরা করোনাকালীন দীর্ঘ সময় বিদ্যালয়ে না আসার কারণে তাদের মধ্যে বিদ্যালয়ে আসার ব্যাপারে যে জড়তা তৈরি হয়েছে তা দূর করতে তাদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করার বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে শিশুতোষ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারে। যেকোনো উপায়ে শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করাই হবে কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে একজন শিক্ষকের অন্যতম ভূমিকা। করোনাকালে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে গৃহবন্দি থাকায় মোবাইলের প্রতি তাদের আসক্তি বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অত্যন্ত সতর্কভাবে শিশুদেরকে শারীরিক বিভিন্ন খেলার দিকে মনযোগী করতে হবে এবং তাদের মোবাইল স্ক্রিনের ক্ষতির বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে হবে। সরকার ডিজিটাল কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আনন্দঘন শিক্ষণ ব্যবস্থা চালুর জন্য বিদ্যালয়সমূহে আইসিটি সামগ্রী হিসেবে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর প্রদান করছে এবং শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় একটি করে বিদ্যালয়ে ওয়েল ইকুইপড ডিজিটাল স্মার্ট ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল বিদ্যালয়ে ডিজিটাল স্মার্ট ক্লাসরুম স্থাপন করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের ডিজিটাল পাঠদানের মাধ্যমে শিশু শিক্ষার্থীদের শিখন ফল অর্জনের দিকে মনযোগী হতে হবে। বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল রেখে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার করলে শিক্ষার্থীরা নতুনের প্রতি আগ্রহী হয় এবং শিখন দীর্ঘস্থায়ী হয়।
বিদ্যালয়সমূহে উন্নত ভৌত অবকাঠামো নির্মাণই যথেষ্ঠ নয়। শিশু শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে দেশপ্রেমে জাগ্রত করতে হবে। নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে শেণি পাঠদান কার্যক্রমের শুরুতেই নিয়মিত সমাবেশ আয়োজন, শপথ বাক্য পাঠ, পবিত্র গ্রন্থ থেকে পাঠ, জাতীয় সংগীত গাওয়া, জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টি মনিটরিং এর মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বই পড়া প্রতিযোগিতা ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। সততা স্টোর, লাইব্রেরি, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু কর্নার, শেখ রাসেল কর্নার এবং মানবতার দেয়াল স্থাপন করতে হবে। যথাযথ মর্যাদার সাথে জাতীয় দিবসসমূহ আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে এবং স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য একটি গুরত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার ও জাতির পিতার প্রতিকৃতি নির্মাণ করা।
গ্রামীণ দরিদ্র ও শহুরে স্বচ্ছল ও ধনী পরিবারের শিশুদের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে দরিদ্রতা, ক্ষুধা, অপুষ্টি ও স্বাস্থ্যহীনতা মোকাবেলার নিমিত্ত স্কুল মিল চালু করা প্রয়োজন। পিছিয়ে পড়া ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল প্রান্তিক পরিবারের শিশুদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো সচেতন থাকা প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী, নৃ-জনগোষ্ঠী ও অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে অধিকতর সচেতন থাকতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক গোষ্ঠী, অঞ্চল, জাতি, স্বাস্থ্যগত অবস্থানের সকল শিশুর প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে ব্রাজিলিয়ান মানবতাবাদী, শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক পাউলো ফ্রেইরি (১৯৭৩) বলেন, শিক্ষা হলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সকল ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য থেকে মুক্ত করার মূল হাতিয়ার। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবস্থাগুলো হলো ইংরেজি মাধ্যম প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাভিত্তিক এবতেদায়ী শিক্ষা ব্যবস্থা, এনজিও পরিচালিত প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা, বে-সরকারি ও প্রি-ক্যাডেট প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। এই সকল শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় আনা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নজরদারীর আওতায় আনতে হবে।
সর্বোপরি, বিদ্যালয়কে সুনাগরিক গড়ার পবিত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে খেলাধুলার সমগ্রী যেমন দোলনা, স্লিপার, সীসো বা ঢেঁকি স্থাপন করতে হবে। শতভাগ শিক্ষার্থীদের স্কুল ইউনিফর্ম পরিধান করে বিদ্যালয়ে আসা নিশ্চিত করতে হবে। সহকারী শিক্ষকগণকে ইউনিফর্ম পরিধান করে বিদ্যালয়ে আসার ব্যাপারে পরিদর্শনকারী কর্মকর্তাগণ স্বচেষ্ট হতে পারেন। অভিভাবক অনেক সময় বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাদের বসার ব্যবস্থা করা গেলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে একটি দৃষ্টিনন্দন গেইট থাকলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের ব্যাপারে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করবে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দর্শণীয় বাগান তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীদের দ্বারা বাগানের পরিচর্যা করা হলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে তা সহায়ক হবে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য প্রতি শ্রেণি থেকে সদস্য নিয়ে পরিচ্ছন্নতা কমিটি করা যেতে পারে। তাতে শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে উঠবে। বিদ্যালয়ে সহ-পাঠক্রমিক কার্যক্রম যেমন, খেলাধুলা ও শরীর চর্চা, সাহিত্য বিষয়ক কর্মকান্ড, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, চারুকারু চর্চা, পাঠ্য বইয়ের বাহিরেও বই পড়া ইত্যাদির প্রতি জোড় দিতে হবে। কারণ, ইংরেজিতে একটি কথা আছে, “All work no play, makes Jack a dull boy”। কাব স্কাউটিং কার্যক্রম জোড়দার করতে হবে। বিভিন্ন ক্লাব (যেমন, ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, বিজ্ঞান ক্লাব, আইসিটি ক্লাব) স্থাপন করে শিশুদের আনন্দঘন পরিবেশে জ্ঞানের জগতে প্রবেশ করানো সম্ভব। শিশুদেরকে পরিস্কার পরিচ্ছনতা অভিযান, বৃক্ষ রোপন, বাগান করার মত বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ও কার্যকরী শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ জন্য কিছু মৌলিক পরিষেবা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যান, কম্পিউটার, ও ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য আলাদা বই, সুপেয় পানি, সবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, ছেলে ও মেয়ে শিশুদের জন্য পৃথক স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন সুবিধার ব্যাপক বিস্তৃতি হয়েছে। শিশুদের নিরাপদ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে সিসিটিভি স্থাপন করা জরুরী। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের যথাসময়ে আগমন ও প্রস্থান নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপন করা যেতে পারে।
গ্রামীণ এলাকায় এবং শহরের বস্তি এলাকায় একটি বড় সমস্যা হলো শিশু শ্রম ও মৌসুমী কাজে লিপ্ত হওয়া। গ্রামীণ এলাকায় অনেক শিশুই বিভিন্ন ফসল মাড়াইয়ের/উঠানোর সময় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের বাবা মা তাদের মৌসুমী কাজে নিয়োজিত করে। এমনকি হাটের দিন অনেক শিশু বিদ্যালয়ে না গিয়ে বাবা বা দাদার সাথে হাটে যায়। এ ক্ষেত্রে মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও প্রয়োজনে অনুপস্থিত শিশুর বাড়ি পরিদর্শন করে অভিভাবকগণকে শিক্ষার গুরত্ব সম্পর্কে বুঝাতে হবে। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সামাজিক সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে একটি আন্দোলনে পরিনত করতে হবে। মাসিক বা ত্রৈমাসিক অভিভাবক/মা সমাবেশে সচেতন অভিভাবক, শ্রেষ্ট শিক্ষক এবং সর্ব্বোচ্চ উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে প্রতি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষকগণের নিয়মিত সাক্ষাৎ এর ব্যবস্থা করে আলোচনা করতে হবে। তাহলে আলোচনার মাধ্যমে শিশুর শিক্ষার ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দূর করা সম্ভব হবে। শিশুরা যেহেতু দীর্ঘ সময় বাবা মা থেকে আলাদা থাকে, তাদের নিয়মিত কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন এবং তাদের সমস্যার কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। শিশুদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের বিষয়ের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন না নিলে শিক্ষা দানের কোনো পদক্ষেপ ফলপ্রুসু হবে না। এছাড়া শিশুরা আলাদা আলাদা পরিবেশ থেকে ও পারিবারিক অবস্থান থেকে বিদ্যালয়ে আসে। এজন্য নিবিড় নজরদারি ও আন্তরিকতার মাধ্যমে তাদের মধ্যকার এই সকল পার্থক্য দূর করে হোমলি পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শিক্ষক ও বাহিরের অন্য যেকোনো পেশাজীবীর ব্যক্তিদের বিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে শিশুদের মাঝে সফলতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে হবে এবং তাদের অনুপ্রেরণার গল্প শুনাতে হবে।
আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী হতে চাই যে, পরিস্তিতি যাই হোক শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক, অভিভাবক, এসএমসি কমিটি ও প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে জড়িত মাঠ পর্যায়ের সকল তদারকী কর্মকর্তা-কর্মচারির সমন্বিত প্রয়াসে কোভিড-১৯ এর ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার সম্ভব হবে। শিশু শিক্ষার্থীরা গুণগত ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে সুনাগরিক হিসেব বেড়ে উঠবে এবং দক্ষ জনসম্পদ হয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রুপান্তর করবে।
লেখকঃ যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহাম হতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন