জিবিনিউজ24ডেস্ক//
যুদ্ধে যাওয়ার মতো শারীরিক যোগ্যতা আছে— এমন সব পুরুষকে ইউক্রেনে অভিযানরত রুশ বাহিনীতে নিয়োগ দিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির নিহত সেনাদের স্ত্রীরা। এই সেনা-বিধবাদের প্রস্তাব— রুশ প্রেসিডেন্ট যেন ফের বড় আকারের সেনা সমাবেশের ডাক দেন।
সোলজার্স উইডো অব রাশিয়া নামে সেনা-বিধবাদের একটি দল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেই পোস্টেই জানানো হয়েছে এ আহ্বান।
টেলিগ্রাম পোস্টে সোলজার্স উইডো অব রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘রাশিয়ায় এখনও যেসব পুরুষ নিরাপদ ও সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছেন, তারা এখনও এমন জীবপ-যাপন করতে পারছেন— কারণ তাদের নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের স্বামীরা যুদ্ধক্ষেত্রে জীবন দিয়েছেন।’
‘কিন্তু তারা যদি পালিয়ে যান, কিংবা নিজের জীবন-যাপন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন— সেক্ষেত্রে আমাদের রক্ষা করবে কে?’
‘রাশিয়ার বেসামরিক পুরুষদের থেকে সেনা সদস্য বাছাই করতে আমরা আমাদের প্রেসিডেন্ট, সেনাবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার ইন চিফ ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিনকে ফের জাতী পর্যায়ে সেনা-সমাবেশের ডাক দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, আমাদের এই আহ্বান জানানোর পূর্ণ অধিকার আছে এবং রাশিয়ার নিরাপত্তা ও সীমান্ত রক্ষার জন্য এটি এই মুহূর্তে জরুরি একটি পদক্ষেপ।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করতে রুশ বাহিনীকে নির্দেশ দেন পুতিন; কিন্তু ইউক্রেনের সেনা বাহিনীর প্রতিরোধ, বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সৈনিক ও যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের বিপুলি পরিমাণ অস্ত্র সহায়তার কারণে অভিযানের ৬ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই হাজার হাজার রুশ সেনা কর্মকর্তা ও সেনাসদস্যের মৃত্যু হয় ইউক্রেনে।
গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানে ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৯৩৭ জন রুশ সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দপ্তর পেন্টাগনের দাবি— যুদ্ধে নিহত রুশ সেনাদের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভাষণের পর গত ২১ সেপ্টেম্বর অভিযানে সেনা ঘাটতি দূর করতে রাশিয়ার সব প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে রুশ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান ভ্লাদিমির পুতিন। এ উপলক্ষে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে সেনা সমাবেশ শুরু হয়। যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক যোগ্যতাসম্পন্ন পুরুষদের বাছাই করাই ছিল এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য।
এর আগে রাশিয়ায় সর্বশেষে সেনা সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৮০ বছর আগে।
প্রায় ৩ লাখ সেনাসদস্য সংগ্রহের পর গত বছর ১৫ অক্টোবর সমাবেশ মুলতবি ঘোষণা করেন পুতিন। তবে তিনি সেনা সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার পর রাশিয়ার অনেক প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন