জিবিনিউজ24ডেস্ক//
প্রায় দুই দশক পর বিমানবালাদের পোশাকে পরিবর্তন আনছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। ব্রিটেনের পোশাক পরিকল্পক ওজওয়াল্ড বোটেঙ্গ নতুন চিন্তাধারার মাধ্যমে বিমানবালাদের পোশাক ডিজাইন করেছেন। নারী কর্মীরা স্কার্ট, প্যান্ট এবং ড্রেসের মধ্যে নিজের পছন্দ মতো পোশাক বেছে নিতে পারেন। জাম্পস্যুট এমনকি টিউনিক ও হিজাব পরার সুযোগও রয়েছে তাদের।
পুরুষ কর্মীদের জন্য অবশ্য থ্রি-পিস স্যুট ডিজাইন করা হয়েছে। তারা নিজেদের সুবিধা মতো রেগুলার অথবা স্লিম ফিট প্যান্ট পরতে পারেন। সব বিমানবালার পোশাকেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। চলতি বছরেই বিমানবালাদের কাছে নতুন পোশাক পৌঁছে দেওয়া হবে।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরোনো পোশাকগুলো দান করে দেওয়া হবে যাতে নতুন করে ওই পোশাক অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারে। বিমান সংস্থার প্রদর্শনশালায় ওই পোশাক রাখা হবে বলেও জানা গেছে। তবে পুরোনো পোশাকটি অবশ্য ওজওয়াল্ডের ডিজাইন করা নয়। ওই পোশাকটির ডিজাইনার ছিলেন জুলিয়েন ম্যাকডোনাল্ড।
বিমানবালাদের পোশাকে যে এই প্রথম পরিবর্তন এসেছে তা নয়। যাত্রীদের নজর কাড়ার জন্য আগেও অনেক সময় বিমানবালা-সহ অন্যান্য কর্মীদের পোশাকে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরনে থাকা স্কার্টের দৈর্ঘ্য কত হবে তা থেকে শুরু করে গলায় স্কার্ফ কীভাবে জড়াবেন— সব কিছুর জন্যই নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয় বিমানবালাদের।
ভার্জিন আটলান্টিক বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, পুরুষ-স্ত্রী নির্বিশেষে কেবিন ক্রুয়ের সদস্যরা ট্রাউজার প্যান্ট অথবা স্কার্টের মধ্যে তাদের পছন্দ মতো পোশাক বেছে নিতে পারেন।
পোশাক পরিকল্পক ডেম ভিভিয়ান ওয়েস্টউড ওই প্রসঙ্গে বলেন, বিমানবালাদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করার কোনো দরকার নেই। যে ধরনের পোশাকে তারা নিজেদের তুলে ধরতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবে, সেই ধরনের পোশাকই তারা পরবেন।
লাল অথবা বার্গান্ডি রঙের মধ্যে বিমানবালারা পোশাকের জন্য নিজের পছন্দমতো রঙও নির্বাচন করে নিতে পারেন। এমনকি তাদের যে ব্যাজ রয়েছে সেখানে ‘শ্রী’ বা ‘শ্রীমতি’ লেখার বাধ্যবাধকতাও থাকছে না। বিমানবালারা ইচ্ছা করলে নিজেদের শরীরে ট্যাটুও আঁকাতে পারেন। এত দিন যা নিষিদ্ধ ছিল।
২০১৬ সালে ভিয়েটজেট বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের কর্মীদের জন্য অদ্ভুত নিয়ম চালু করা হয়েছিল। কর্মীরা চিরাচরিত পোশাক তো পরতেই পারেন। এমনকি তাদের বিকিনি পরার অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল।
নারীরা নিজেদের পছন্দ মতো লাল বা হলুদ রঙের বিকিনি পরতে পারেন। অধিকাংশ নারী কর্মী বিকিনি পরেই বিমান পরিষেবা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে পরে সমস্যা দেখা যায়। মাঝ আকাশে বিমানবালারা বিকিনি পরে নাচগান শুরু করেন। জানাজানি হয়ে যাওয়ায় ওই বিমান সংস্থাকে জরিমানাও দিতে হয়।
ভিয়েটজেট সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর জে এল লিঙ্গেশ্বর এই প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, বিশেষ অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিমানবালাদের বিকিনি পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিঙ্গেশ্বর জানিয়েছিলেন, ভিয়েটজেট বিমান সংস্থার কর্মীদের সাধারণত লাল শার্ট, খাকি বাদামি রঙের শর্টস, টুপি এবং লাল রঙের ফ্ল্যাট জুতা পরতে দেখা যায়।
অস্ট্রেলিয়ায় বোনজা নামের একটি বিমান সংস্থা রয়েছে। এখানকার বিমানবালাদের শার্ট, স্কার্টের মতো নির্দিষ্ট কোনো পোশাক পরার বাধ্যবাধকতা নেই। তারা যাত্রীদের মতো যেকোনো পোশাক পরতে পারেন।
বোনজা সংস্থার বিমানবালারা কম দৈর্ঘ্যের প্যান্ট, টি শার্ট, ট্রাউজার এবং ট্রেনার্স ড্রেস পরতে পারেন। পোশাকে বাহার আনতে আলাদা করে ব্লেজার, স্কার্ফ, ক্রাভাট নামের বিশেষ গলাবন্ধনী ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে।
তবে বোনজার কর্মীরা সব রঙের পোশাক পরতে পারতেন না। পোশাকে বৈচিত্র্য দেখা গেলেও কর্মীরা সাদা অথবা কালো রঙের পোশাক পরতেন। আবার লিলি ফুলের রঙের পোশাক পরার অনুমতিও ছিল। এই তিনটি রং ছাড়া অন্য কোনো রঙের পোশাক তারা পরতে পারতেন না।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন