জিবিনিউজ24ডেস্ক//
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্যালেস এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলার ঘটনায় দেশটির সদ্য সাবেক বিচার ও জননিরাপত্তা মন্ত্রী অ্যান্ডারসন টরেসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির রাজধানীতে সরকারি ভবনগুলোতে আক্রমণের সময় ব্রাসিলিয়ায় নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ‘ফাঁক’ রাখা এবং হামলায় ‘যোগসাজশ’ রয়েছে এমন সন্দেহে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (১৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিচার মন্ত্রী ছিলেন অ্যান্ডারসন টরেস। ফ্লোরিডায় ছুটি কাটিয়ে ব্রাজিলে ফিরে আসার পর শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর জাইর বোলসোনারোও একই মার্কিন অঙ্গরাজ্যে ভ্রমনে গিয়েছিলেন।
বিবিসি বলছে, গত মঙ্গলবার ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে ডি মোরেস সাবেক মন্ত্রী টরেসকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। টরেসের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ঠিক কী তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার না হলেও মোরেস এই তার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ‘ফাঁক’ রাখা এবং হামলায় ‘যোগসাজশের’ কথা উল্লেখ করেছেন।
ব্রাজিলের নতুন বিচারমন্ত্রী ফ্লাভিও ডিনো বলেছিলেন, কর্তৃপক্ষ টোরেসকে ব্রাজিলে ফিরে আসার জন্য সোমবার পর্যন্ত সময় দেবে অন্যথায় তাকে প্রত্যর্পণের মুখোমুখি হতে হবে। তবে বিচারপতি মোরেসের আটক আদেশের বিষয়ে জানার পরে টরেস গত মঙ্গলবার টুইটারে বলেছিলেন, তিনি তার ছুটি বাতিল করছেন এবং নিজেকে হস্তান্তর করতে ব্রাজিলে ফিরে আসবেন।
এরপর শনিবার তাকে আট করা হলো।
জাইর বলসোনারো গত বছরের অক্টোবরের নির্বাচনে পরাজয়ের পর বারবারই সেই ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন। চলতি মাসের শুরুতে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির নতুন সরকারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে দেশত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। বলসোনারো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
এরপর ক্ষমতার লড়াই ঘিরে গত রোববার যেন বিক্ষোভের আগুনে বিস্ফোরিত হয় ব্রাজিল। আর এতেই সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর সমর্থকরা হামলা চালায় দেশটির কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্যালেস ও সুপ্রিম কোর্টে।
চরম ডানপন্থি এই সমর্থকরা রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে একের পর এক জায়গায় হামলা চালায়। বিরোধী দলের এই হামলার তীব্র সমালোচনা করে একে ‘ফ্যাসিস্ট’ হামলা বলে আখ্যা দেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গত রোববার ব্রাজিলের কংগ্রেস, সুপ্রিম কোর্টের সদর দপ্তর ও প্রেসিডেন্ট প্যালেসে হামলার ঘটনা ফের একবার ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটলে হামলার কথাই মনে করিয়ে দিলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সেই ঘটনায় জড়িত ছিল ট্রাম্পের সমর্থকরা। আর বলসোনারো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন