পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসন, জাতিগত বৈষম্য ও নিপীড়ন এবং শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার সংগ্রামে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর অনুসারী আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান অর্থাৎ আসাদ শহীদ হবার ঘটনা বাংলার সংগ্রামী মানুষের প্রাণে জাগিয়েছিল অমিত সাহস ও প্রচন্ড শক্তি। আজ সেই শহীদ আসাদের রক্তে অর্জিত দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, বিদ্যুতের পর আবারও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সররকার জনগনের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করেছে। এবার গ্যাসের মূল্য প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি সরকারের গণবিরোধী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। সরকার বিদ্যুতের পর গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করে চরম দুর্ভোগে থাকা জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। গ্যাসের মূল্য ‘এক লাফে’ প্রায় তিনি গুন বৃদ্ধি জনগনের সাথে পরিহাস ছাড়া কিছুই নয়।
নেতৃদ্বয় গ্যাসের মুল্য প্রায় তিনগুন বৃদ্ধির সরকারী সিদ্ধান্তকে ‘স্বেচ্ছাচারী ও হঠকারী’ হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শহীদ আসাদ সহ লাখো শহীদরে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশটা মগের মুল্লুকে পরিনত হয়েছে। যার ফলে গ্যাসের মুল্য এক লাফে তিনিগুন বৃদ্ধির দু:সাহস করছে। শহীদ আসাদের প্রদর্শিত পথে লুটপাটের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় পুরো দেশটা লুটেরাদের নিয়ন্ত্রনে চলে যাবে।
তারা আরো বলেন, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদনে যথাযথ নজর না দিয়ে আমদানি নির্ভরতায় গুরুত্ব দেয়ার কারণেই জ্বালানি খাতে বিপর্যয় নেমে আসছে। তা না হলে, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নিয়ামক এবং জনগণের নিত্য ব্যবহার্য কোন পণ্যের মূল্য এক ধাপে প্রায় তিনিগুন বৃদ্ধি হয় কি করে। এমনিতেই গ্যাসের সংকট চরমে, কলকারখানা এমনকি বাসাবাড়ীতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নেই, গ্যাস সংকটে বাসাবাড়ীর চুলা জ্বলছেই না, কলকারখানার উৎপাদনও ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এমন অসহনীয় পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে শিল্পকারখানা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, ১৯৬৯'র ২০ জানুয়ারি আসাদের শাহাদাতের পর গণআন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। তাই আসাদকে গণঅভ্যুত্থানের নায়ক বলা হয়। '৬৯-এর ধারাবাহিকতায় একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হলেও শহীদ আসাদের চেতনা কখনও ফুরাবার নয়। ৬৯এর প্রচন্ড গতিবেগই বস্তুত ’১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলে। এদেশের মানুষের সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদবিরোধী সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ’৬৯ একটি বড় মাইলফলক। আসাদ তাই জনগণের মুক্তির প্রেরণা আর ৬৯ মুক্তির দিশারী।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন