জিবিনিউজ24ডেস্ক//
পরিবেশ ও মানবকল্যাণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা-তৎপরতার ব্যাপারে বরাবরই আগ্রহী বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটস। বিভিন্ন সময়ে এ সংক্রান্ত নানা গবেষণায় বিনিয়োগ-আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন তিনি।
এবার মাইক্রোসফটের এই সহপ্রতিষ্ঠাতা বিনিয়োগ করেছেন গরু ও অন্যান্য গবাদিপশু থেকে নির্গত মিথেন গ্যাস রোধ সম্পর্কিত একটি প্রকল্পে। রুমিন ৮ নামে অস্ট্রেলিয়ার এক পরিবেশবাদী সংস্থা শুরু করেছে প্রকল্পটি।
মঙ্গলবার সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড মেসিনার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিল গেটেসের বিনিয়োগ গ্রহণ করেছে রুমিন ৮। সর্বশেষ এই প্রকল্পটিতে তিনি দিয়েছেন ১ কোটি ২০ লাখ ডলার।
এছাড়া বিল গেটসের মাধ্যমে অনুপ্রাণীত হয়ে সংস্থাটিকে ইতোমধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ই কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনের মালিক জেফ বেজোস, চীনা ই কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবার সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা-ও অর্থ বিনিয়োগ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। তবে তারা কত অর্থ দিয়েছেন— তার উল্লেখ করা হয়নি বিবৃতিতে।
বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির একটি বড় কারণ বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। বায়ুমণ্ডলে কিছু বিশেষ গ্যাসের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেলে সূর্য থেকে আসা তাপ ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলনের মাধ্যমে বেরিয়ে যেতে না পেরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে থাকে। পরিবেশবিজ্ঞানের ভাষায় ব্যাপারটিকে বলা হয় গ্রিনহাউস এফেক্ট।
গ্রিনহাউস এফেক্টের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্যাস, তারপরেই আছে মিথেন। বিজ্ঞান বলছে, প্রতিদিন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ মিথেন মিশছে, তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসছে গরু, মহিষ, ছাগল, হরিণ প্রভৃতি প্রাণীর পাকস্থলী থেকে নির্গত বায়ু থেকে। কাঁচা ঘাস, খড় ও লতাপাতার ওপর নির্ভরশীল এসব প্রাণীর পাকস্থলিতে যখন খাদ্যের পরিপাক ক্রিয়া চলে সে সময়েই উৎপাদন ও নির্গত হয় মিথেন।
পশ্চিমের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত গবেষণায় জানা গেছে, গরু-মহিষ জাতীয় গবাদিপশুকে যদি সামুদ্রিক ঘাস বা শৈবাল (সী উইড) অভ্যস্ত করে তোলা যায়, সেক্ষেত্রে বাতাসে মিথেন নির্গমণের হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস করা সম্ভব।
অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী পার্থভিত্তিক সংস্থা রুমিন ৮ সম্প্রতি গবাদিপশুর খাদ্যপোযোগী সামুদ্রিক শৈবাল উৎপাদন বিষয়ক প্রকল্প শুরু করেছে। সম্প্রতি সেই প্রকল্পেই বিল গেটস বিনিয়োগ করেছেন বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে ডেভিড মেসিনা বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব এই প্রকল্পটি শুরু করার পর থেকে তাদের কাছ থেকে যে সহায়তা ও অনুপ্রেরণা পেয়েছি, তাতে আমরা আপ্লুত।’
‘গবাদি পশুর জন্য বিকল্প খাদ্য প্রস্তুতের এই প্রকল্প যদি সফল হয় এবং অন্যান্য দেশ যদি এটি গ্রহণ করে— সেক্ষেত্রে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় একটি বড় অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হবে।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন