নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবইয়ে ভুল সংশোধনে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল করেছেন কিনা তার তদন্ত করতে আরেকটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যবইয়ে নানা ভুল ও অসঙ্গতি নিয়ে আজ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে ‘নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ক’ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি বছরে পাঠ্যবই একেবারে করে ফেলা দুরূহ কাজ। এজন্য এ বছরটাও আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দিয়েছি। আমরা সারা বছর সবার মতামত নেব এবং পরিবর্তন ও পরিমার্জনের কাজটা চলবে। আমরা চেষ্টা করেছি যেন কোথাও কোনো ধর্মীয় বিদ্বেষ না থাকে, কোনো লিঙ্গবৈষম্য না থাকে, ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশার যেন কোনো বিদ্বেষ-বৈষম্য না থাকে।
পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ তা অত্যন্ত ইতিবাচকভাবেই আমরা দেখছি।
তিনি বলেন, আমরা দুটি কমিটি গঠন করবো। একটি কমিটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। সেখানে স্বাস্থ্য, ধর্মীয়, পেশাগত বিশেষজ্ঞরা থাকবেন একটিতে। যে কেউ যেকোনো জায়গা থেকে যে কোনো মতামত দিতে পারবেন। বিশেষজ্ঞ কমিটি তা যাচাই-বাছাই করে সংশোধন করবে। কোথাও ভুল থাকলে নিশ্চয়ই সংশোধন করা হবে। কারো কোনো অস্বস্তি থাকলে তা বিবেচনায় নেব। কোথাও যদি কোনো কিছু নিয়ে আপত্তি তাকে, কোথাও যদি সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকে সেগুলোকেও আমরা বিবেচনায় নেব।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কখনই ধর্মবিরোধী বা ধর্মবিদ্বেষী কোনো কিছু করেনি এবং এটি আমাদের ঘোষিত নীতির অংশ। আমরা কোরআন এবং সুন্নাহবিরোধী কোনো কিছু করবো না। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আগাত দেবার কোনো অধিকার যেমন আমাদের নেই, আমাদের কোনো ইচ্ছাও নেই।
তিনি বলেন, কিছু অভিযোগ এসেছে, কিছু আলোচনা আমরা দেখছি। হয়তো শস্যের মধ্যেও কোথাও ভূত আছে। যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছি সেখানে অনেক মানুষ জড়িত। পাঠ্যবই তৈরির সঙ্গে জড়িত এনসিটিবির কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু করে থাকলে তা তদন্ত করে দেখা হবে। কোথাও যদি কারো কোনো গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়, কোথাও যদি নেতিবাচক কোনো দিকে নিয়ে যাবার অপচেষ্টা ছিল বলে-মনে হয় তাহলে অবশ্যই আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। এনসিটিবির গাফলতি আছে কি না তা চিহ্নিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরও প্রতিনিধি থাকবেন বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে কমিটি দুটির বিস্তারিত জানানো হবে।
মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে যেসব ভুল পেয়েছি সেগুলো আমরা সংশোধন করে ওয়েবসাইটে দিয়েছি। এছাড়া পরেও সংশোধনের সুযোগ আছে। আমি আশা করবো পাঠ্যপুস্তককে কেন্দ্র করে কোথাও যেন কোনো অস্থিতিশীলতা ঘটানোর চেষ্টা না করা হয়। আমরা কথা দিতে পারি যে কোনো ধরনের পরামর্শ বিবেচনা করবো এবং ভুল থাকলে সংশোধন করবো। আর যাদের গাফিলতি তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ কামাল হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন