আবুল কাশেম রুমন, সিলেট:
সিলেট যদিও প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। কিন্তু প্রতিদিন যে হারে সবজির দাম বাড়ছে তাতে সাধারণ জীবন চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে সবজি চাষে জড়িয়ে পড়েছেন অনেকে আবার শখে সবজি চাষ করতে দেখা গেছে। তবে বিশেষ করে ইদানিং সিলেটের জগন্নাথপুরে বেশি ভাগ মানুষ সবজি ও কৃষি কাজে এগিয়ে রয়েছেন। জগন্নাথপুরের সবজি সিলেট জুড়ে ছয়লাভ হয়ে পড়ছে। সিলেটের চাহিদা পুরণ করে বিদেশেও বিক্রি হচ্ছে জগন্নাথপুরের সবজি। অনেকেই কৃষি কাজের মধ্য দিয়ে বেছে নিচ্ছেন রোজগারের পথ।
তেমনই একজন জগন্নাথপুরের মিন্নত আলী। জমিতে সবজি চাষ করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন একসময় ধান চাষ করা এই কৃষক। তার বাগানে ফলেছে আশাতীত সবুজ ফসল। তার ওই বাগান দেখতে প্রায় প্রতিদিন লোকজনের সমাগম ঘটছে। কৃষি খামার তৈরি ও ফসলাদি উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছেন এলাকার বেকার মানুষজন।
মিন্নত আলী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়ইেরনর যোগল নগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ফসলি জমিতে ধান চাষ করে আস ছিলেন। ধান বিক্রি করে যা পেতেন, তা দিয়ে কোনোরকমে চলতো তার পরিবার। এ অবস্থায় তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবার-পরিজনের ভরপোষণ ও ব্যয় ভার নিয়ে।
এ অবস্থায় পরিবারের আট সদস্য নিয়ে এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিলেন বাড়ির কাছে থাকা নিজের পতিত জমিসহ ধান চাষের জমিতে সবজি চাষ করার। নিজের মালিকানাধীন ১২০ শতক জমিতে শুরু করেন সবজি চাষ। এতেই মিলেছে সাফল্য।
এদিক সেদিক থেকে টাকা যোগাড় করে সবজি চাষে মনোযোগ দেন মিন্নত আলী। কৃষি অফিস বা সরকারি কোনো প্রকার সহায়তা ছাড়াই ক্ষেতের কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। এক সময় তার সবজি ক্ষেত হয়ে ওঠে সবুজ-শ্যামল এক বাগান। চলতি শীত মৌসুমে তার ফলানো নানারকম সবজির মধ্যে রয়েছে বাহারি জাতের শিম, লাউ, বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, শসা ইত্যাদি।
সবজি বাগান করতে মিন্নত আলীর খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। ভালো ফলন হয়েছে। প্রতিদিনি সকালে সবজি ব্যবসায়ীরা ভিড় করেন তার ক্ষেত থেকে সবজি আনতে। এ পর্যন্ত তিনি তিন লাখ টাকার শীতকালীন সবজি বিক্রি করতে পেরেছেন। পুরো ফসল তুলতে পারলে আরও ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
তবে পোকার আক্রমণে তার শিম গাছের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। শীত শেষে তার ক্ষেতে বর্ষাকালীন নানা ধরণের সবজি যথা ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ডেঙ্গা, কুমড়া, ঢ্যাঁড়শ, লগী শিম ইত্যাদি ফলানোরও ইচ্ছা রয়েছে তার। তার এ সবজি বাগান দেখে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অনেকে সবজি বাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকে বাস্তবে কাজ শুরু করেছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন