সিলেট নগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন (৩০) নামে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ এবং তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ অভিমত প্রকাশ করে যে, পুলিশী হেফাজতে হত্যা আইনের শাসনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করে। যা গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য শুভ নয়। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন। তারা বলেন, দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই ধরনের প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। যখন কোনও ব্যক্তি আটক বা গ্রেফতার হয় তখন তিনি রাষ্ট্রের হেফাজতে চলে যায়। আটক বা গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির সকল ধরনের নিরাপত্তার দায় রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়। প্রায়ই দেখা যায়, আটক ব্যক্তিদের অনেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের শিকার হন। এমনকি মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটছে, যা অনাকাঙ্খিত এবং অপ্রত্যাশিত। গতানুগতিক তদন্তের নামে নির্যাতন বা মৃত্যুর কারণগুলো অপ্রকাশিত থেকে যাচ্ছে। নেতৃদ্বয় বলেন, পুলিশী হেফাজতে মৃত্যুর দায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কোনভাবেই এড়াতে পারে না৷ এই সকল নির্যাতন ও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা অত্যান্ত জরুরি। এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় অবশ্যই বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যাতে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেশাগত অসাদচরণ, বলপ্রয়োগ, ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো কোনও বিষয় সম্পৃক্ত থাকলে, তা বেরিয়ে আসে। তারা আরো বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে জনহিতকর বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে সর্বশেষ সিলেটে রায়হান হত্যাকান্ডসহ বিভিন্ন কারণে ওঠা অভিযোগের পর অভিযোগে সে ভাবমূর্তি শূন্যের কোঠায় নেমে আসতে শুরু করেছে। নেতৃদ্বয় বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অসামান্য অবদান ও আত্মত্যাগের কারণে স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষের মনে পুলিশের প্রতি মমত্ববোধ জাগ্রত হয়েছিল। কিন্তু, বাংলাদেশের শাসকগোষ্টি পুলিশ বাহিনীকে নিজেদের রক্ষার কাজে যতটা ব্যবহার করেছে জনগণের স্বার্থে ততটা ব্যবহার করেনি। বার বার সরকার পরিবর্তন হলেও পুলিশবাহিনীকে গণমুখী করার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়নি। তারা বলেন, সকলকেই মনে রাখতে হবে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিতর্কিত হলে, তার ওপর জনগণের আস্থা উঠে গেলে তার সুযোগ নেবে কোনো অশুভ ও অগণতান্ত্রিক শক্তি। কাজেই সরকারকে দেশ এবং একই সঙ্গে নিজেদের স্বার্থে অন্যায়, অন্যায্য ও বিতর্কিত কর্মকান্ড থেকে দল ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে। সেইসঙ্গে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে, পুলিশকে গণমুখী করতে উদ্যোগ নিতে হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন