ভূমিকম্পের বড় ধরণের ঝুঁকিতে সিলেট অঞ্চল

আবুল কাশেম রুমন,সিলেট:

 ভূমিকম্পের বড় ধরণের ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট অঞ্চল। জানা যায় বাংলাদেশের সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কয়েকটি প্লেট থাকার কারণে এসব এলাকা ভূমিকম্পের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভু-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসির এক সাক্ষাতে বলছেন, উত্তরে তিব্বত সাব- প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট এবং দক্ষিণে বার্মা সাব প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে, কিশোরগঞ্জ চট্টগ্রাম হয়ে একেবারে দক্ষিণ সুমাত্রা পর্যন্ত চলে গেছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুই যুগ ধরে এ নিয়ে গবেষণা করেছে। সেখানে দেখা  গেছে, ইন্ডিয়া প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে দীর্ঘ সময় ধরে কোন ভূমিকম্পের শক্তি বের হয়নি। ফলে  সেখানে ৪০০ থেকে হাজার বছর ধরে শক্তি জমা হয়ে রয়েছে।
ইন্ডিয়া প্লেট পূর্ব দিকে বার্মা প্লেটের নীচে তলিয়ে যাচ্ছে আর বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে  সেখানে যে পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে, তাতে ৮ মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হতে পারে।
অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলছেন, এটা যেমন একবারে হতে পারে, আবার কয়েক বারেও হতে পারে। তবে যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। সাধারণত এ ধরনের ক্ষেত্রে সাত বা আট মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কিন্তু কবে বা কখন সেটা হবে, তা এখনো বিজ্ঞানীদের এখনো ধারণা নেই। সানফ্রানসিসকো বা দক্ষিণ আমেরিকার ভূমিকম্পের সঙ্গে এর মিল রয়েছে।
সুনামগঞ্জ, জাফলং অংশে ডাউকি ফল্টের পূর্বপ্রান্তেও ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন। এসব ফল্টে ভূমিকম্প হলে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বা বিপদের মাত্রা অনেক বেশি বলে আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশে সর্বশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে ৭.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে।
সারা বিশ্ব অনেক গুলো টেকটোনিক প্লেটের মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। যখন এসব প্লেট নড়াচড়া করে, যেসব দেশ বা এলাকা  সেই প্লেটগুলোর ওপরে অবস্থিত,  সেখানে ভূমিকম্প দেখা যায়। হিমালয়ের পাদদেশে নেপাল যে টেকটোনিক প্লেটের ওপরে বসে রয়েছে, সেটার ওপরেই রয়েছে ভারতের উত্তর অংশ।
ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের কর্মকর্তা রজার মুসন বিবিসিকে বলেছেন, সেখানে কোন ভূমিকম্প হলে শনিবারের তুরস্কের ভূমিকম্পের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। বিশেষ করে কাঠমান্ডুর মতো শহর গুলো বিশেষ ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ এই শহরটি নরম শিলা পাথরের পুরু স্তরের ওপরে তৈরি হয়েছে। ফলে ভূমিকম্প হলে সেখানে কম্পন বেশি অনুভূত হবে।
এছাড়া প্রায় দেখা যায় সিলেটে ছোট-ছোট মৃদু ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে থাকে, কখনও বড় বড় ভূমিকম্পন হয়ে। তবে এস কম্পনে এখন পর্যন্ত বড় ধরণের কোন ঘটনা ঘটে নাই। ভবিষ্যতে তা কি হবে গবেষণা করা হচ্ছে তবে বিশেষজ্ঞদের মতে কোন সময় বড় ভূমিকম্পন হতে পারে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন