জিবিনিউজ24ডেস্ক//
নাবলুসে শোকের মিছিল কেবলই দীর্ঘ হচ্ছে। গেল বুধবার পশ্চিম তীরের প্রাচীন এই শহরে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর অভিযানে অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এই ১১ জনের একজন হলেন একটি হাসপাতালের নার্স আলিয়াসের বাবা আবদেলাজিজ। আলিয়াসের বাবার লাশ যখন হাসপাতালে পৌঁছায় তখন তিনি হাসপাতালে কাজ করছিলেন। তবে তিনি জানতেন না যে ইসরায়েলি হামলায় তারা বাবা নিহত হয়েছে।
আলিয়াস ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে কাজ করতে করতেই নিহতদের মধ্যে নিজের বাবাকে খুঁজে পান।
আলিয়াস বলেন, আমি যখন সকালের শিফটে কাজ করছিলাম, তখন আহতদের আনা হচ্ছিল। আমি পর্দা সরিয়ে দেখি আবার বাবার লাশ। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বিশাল এক ধাক্কা খাই। আমি চাইছিলাম কেউ বলুক, এটা একটা দুঃস্বপ্ন।
ওই অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনী যখন জিপ থেকে গুলি করছিল, তখন আবদেলাজিজ একটি মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আবদেলাজিজের গুলিবিদ্ধ হওয়ার পুরো দৃশ্যটি ফোনে রেকর্ড করেন ফারাজ নামে একজন।
ওই সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে যারা পাথর ছুঁড়ছিল, তাদের দেখছিলেন ফারাজ। তিনি বলেন, এখানে কোনো বন্দুকধারী ছিল না। এরা ছিল নিরস্ত্র। সৈন্যরা নির্বিচারে গুলি করছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা এই ঘটনার তদন্ত করছে। তারা বলছে, ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে হামলা বন্ধে অভিযান চালানোর সময় সৈন্যরা ফিলিস্তিনিদের তীব্র গুলিবর্ষণের মুখে পড়েছিল। সেনাবাহিনী থ্রি লায়ন্স ডেন জঙ্গি গোষ্ঠীর একটি বাড়ি টার্গেট করে। গত বছর এরা নাকি এক ইসরায়েলি সৈন্যকে হত্যা করেছিল।
গত বুধবারের ইসরায়েলি এই হামলা ছিল গত দুই দশকের মধ্যে অধিকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। বহু মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। বুলেটে আহতদের যে পাঁচটি হাসপাতালে নেওয়া হয় তার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ১৬ জন বুলেটবিদ্ধ মানুষকে। এদের কারও কারও আঘাত গুরুতর ছিল।
অনেকে এর কোনো রাজনৈতিক সমাধান দেখছেন না। ফিলিস্তিন নেতারা নাবলুস হামলাকে গণহত্যা বলে বর্ণনা করছেন।
জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামি জিহাদ এর প্রতিশোধ নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
ইসরায়েলিরাও সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনে হামলার শিকার হয়েছে। নতুন জাতীয়তাবাদী সরকারের কিছু মন্ত্রী এখন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলছেন।
রাতের বেলায় ফিলিস্তিনিরা আবার রকেট হামলা চালাতে শুরু করেছে। আর ইসরায়েলিরা চালাচ্ছে বিমান হামলা। শান্তি ফিরিয়ে আনতে এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব মধ্যস্থতার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে। বাতাসে এখন আরও অস্থিরতার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন