জিবিনিউজ24ডেস্ক//
শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকটি প্রধান সেক্টরে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির সরকার মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এই ঘোষণা দেয়।
মূলত ব্যাপক উচ্চ কর এবং ইউটিলিটি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কান ইউনিয়নগুলোর একদিনের জাতীয় ধর্মঘট শুরুর একদিন আগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। বুধবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের প্রতি শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে কারণ তার সরকার ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে এবং এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর আইএমএফের ঋণ পেতে মানুষের ওপর করও বাড়িয়েছে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলেছে, ‘প্রয়োজনীয় পরিষেবা’ চালু রাখা সংক্রান্ত আদেশ জারির জন্য প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে তার নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন। এর ফলে ট্রেড ইউনিয়নের পরিকল্পিত কর্মকাণ্ডকে কার্যকরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গণপরিবহন, খাদ্য বা কয়লা, তেল, জ্বালানি সরবরাহ, সড়ক, রেল বা আকাশপথে পরিবহনের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধাসহ . . বিমানবন্দর, বন্দর এবং রেললাইনগুলোকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পরিষেবা হিসাবে ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে।’
প্রয়োজনীয় পরিষেবা সংক্রান্ত এই আদেশ কেউ অমান্য করলে তাদের চাকরি হারানোর ঝুঁকি রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ব্যাংক কর্মচারী এবং সরকারি হাসপাতালের কর্মচারীসহ শ্রীলঙ্কার ৪০ টিরও বেশি ট্রেড ইউনিয়ন জানিয়েছে, জানুয়ারি মাস থেকে করের হার দ্বিগুণ করার প্রতিবাদে তারা বুধবার কাজ করবে না।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বিক্রমাসিংহে সরকারের এই আদেশ সত্ত্বেও তা অমান্য করে বুধবার নিজেদের নির্ধারিত ধর্মঘট পালনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ট্রেড ইউনিয়নগুলো। শ্রীলঙ্কার টিচার্স ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য জোসেফ স্ট্যালিন জানিয়েছেন, ট্রেড ইউনিয়নগুলো ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরিষেবা চালু রাখা সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এই প্রথম এত কঠিন অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। দীর্ঘদিন সংকটে জর্জরিত থাকার পর দেশের অর্থনীতিকে ফের দাঁড় করানোর জন্য আইএমএফের কাছে জরুরিভিত্তিতে ২৯০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সরকার।
এই ঋণ না পেলে দেশটির জন্য ঘুরে দাঁড়ানো কার্যত অসম্ভব হতে পারে। কিন্তু ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কাকে কিছু শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। আর এর জেরেই ব্যয় কমানোর পাশাপাশি মানুষের ওপর সরকার কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন