জিবিনিউজ24ডেস্ক//
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, টেকসই শান্তি ও সম্প্রীতি অর্জনের লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রয়াস নিশ্চিত করতে আইপিইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৪৬তম আইপিইউ কনফারেন্স উপলক্ষে বাহরাইনের রাজধানী মানামার এক্সিবিশন ওয়ার্ল্ড বাহরাইনের প্লেনারি গ্রান্ড হলে আয়োজিত 'প্রোমোটিং পিসফুল কো-এক্সিসটেন্স অ্যান্ড ইনক্লুসিভ সোসাইটিজ : ফাইটিং ইনটোলারেন্স' শীর্ষক জেনারেল ডিবেটে অংশগ্রহণ করে স্পিকার এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) নেতৃত্বের ভূমিকা রেখে চলেছে। সংঘর্ষ ও সহিংসতা পরিহার করে বিশ্বের সব জাতির পরিশুদ্ধির জন্য আইপিইউর এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ।
স্পিকার বলেন, এ ধরনের সেমিনার বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ ও সমস্যা সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্টার জন্য সহায়ক। টেকসই শান্তি ও সম্প্রীতি অর্জনে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রয়াসের বিকল্প নেই। সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ও বৈষম্য নির্মূলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবতার ঘোষণার বাস্তবায়ন সম্ভব। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতি কখনো বৈষম্যের ভিত্তি হতে পারে না।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতিকে অন্যায়, অবিচার ও সব ধরনের বৈষম্যের বিরূদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করে স্বাধীনতা। সব ধরনের জাতি ও বর্ণগত বৈষম্য দূরীকরণের এজেন্ডা বাংলাদেশ সবসময় সমর্থন করে আসছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ধর্ম, লিঙ্গ, জন্মস্থান নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের সমতা নিশ্চিত করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাংলাদেশের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য। বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে থাকে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তিকে উৎসাহিত করে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ লিঙ্গ, শ্রেণি, ধর্ম, ভৌগোলিক সীমানার ঊর্ধ্বে সব জাতির জন্য সমতাভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা নির্দেশ করে। লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করা ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নির্মাণের পূর্বশর্ত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর সবুজ, শান্তিপূর্ণ বিশ্ব নির্মাণে সবাইকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। সংসদীয় কূটনীতি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সংসদ সদস্যরা জনসাধারণের জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তনে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষার প্রসার ইত্যাদি সবক্ষেত্রেই সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। এসময় একটি সহনশীল, সমতাভিত্তিক, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভূক্তিমূলক পৃথিবী নির্মাণে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান স্পিকার।
জেনারেল ডিবেটে অস্ট্রেলিয়া, মিশর, জাম্বিয়া, মালাউই, ইয়েমেন, জিম্বাবুয়ে, সেনেগাল, আফগানিস্তান, সিয়েরা লিওন, মালদ্বীপ, বতসোয়ানা, নাইজার, ডেনমার্ক, হাঙ্গেরি, এস্তোনিয়া, মালি, স্পেন, ইউক্রেন, স্লোভেনিয়া ও অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
জেনারেল ডিবেটে শাহে আলম এমপি, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এমপি, উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, রাহগির আলমাহি এরশাদ এমপি, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম এমপি, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম, যুগ্মসচিব এম এ কামাল বিল্লাহ ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন