বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন

সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অন্তর্গত ৭৫টি ওয়ার্ডে বসবাসকারী সহস্রাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

আজ শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা-২০২৩’ শীর্ষক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন হেলাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাদসিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, "শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলে আজ ১৮ কোটি মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা আছে। তিনি বেঁচে আছেন বলেই করোনাকালে সারাবিশ্ব যখন হুমকিতে পড়েছিল, বাংলাদেশ তখন মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। বিনাপয়সায় তিনি দেশের কোটি কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়েছিলেন। অর্থনৈতিক মন্দা যখন বিশ্বকে গ্রাস করে ফেলেছে তখনো বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাই আগামী নির্বাচনেও দেশের স্বার্থে মুক্তিযোদ্ধারা শেখ হাসিনার পক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।"

তিনি আরও বলেন, "হঠাৎ করে স্বাধীনতা আসেনি। হঠাৎ করে রাষ্ট্র পাননি। হঠাৎ করে ভারতের সাহায্য আসেনি। আমরা যখন ভারত গিয়েছিলাম, আমাদের থাকা-খাওয়া, আমাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা, সবকিছু আমরা রেডিমেট পেয়েছিলাম। কারণ, আগে থাকতেই সেগুলো বঙ্গবন্ধু ব্যবস্থা করেছিলেন। আমাদের মুজিব বাহিনীর মূল নেতা ছিলেন শেখ মুজিব। তিনি এগুলো আগে থেকেই বন্দোবস্ত করেছিলেন। যার জন্য প্রত্যেকটি জায়গায় আমাদের ক্যাম্প ছিল, আমরা সবকিছু পেয়েছিলাম। আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে।"

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, "আপনাদের যে অবদান তার তুলনায় আমাদের কোনো প্রয়াসই যথাযথ নয়। তারপরও আমরা এ ক্ষুদ্র আয়োজন করে চলেছি। ইনশাআল্লাহ ! প্রতি বছরই এ আয়োজন করবো। এ আয়োজনের মাধ্যমে আপনাদের কাছে পেয়ে, আপনাদের সান্নিধ্য পেয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপ্লুত হই।আমার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ শেখ ফজলুল হক মণির সান্নিধ্য আমি পাইনি। কিন্তু আপনাদের সান্নিধ্য পেয়ে আমি পিতার সান্নিধ্য পাই। তাই আপনারা এই বয়সেও এত কষ্ট করে আসেন, এতে আমি উপলব্ধি করি -- আপনাদের ভালোবাসা, আমার প্রতি আপনাদের আবেগ। সেজন্য আমি আপনাদেরকে সশ্রদ্ধ সালাম জানাই।" 

তিনি বলেন, "বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ছিল বলেই তিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তিনি বাঙালিকে ভালোবেসে গেছেন এবং এর জন্য তিনি ত্যাগ করে গেছেন। আর তার সেই ভালোবাসাকে প্রকাশের জন্য তিনি অকৃত্রিম-অপূরণীয় আত্মত্যাগকে বেছে নিয়েছিলেন।"

মুক্তিযোদ্ধাদের পৌর কর মওকুফে নিজ ক্ষমতার সম্ভব সর্বোচ্চ ব্যবহার করবেন জানিয়ে মেয়র তাপস আরও বলেন, "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন সম্মানিত করে চলেছেন তার সাথে সাথে আবাসস্থলেরও ব্যবস্থা করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রয়াসকে বেগবান করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যে সকল আবাসস্থল আছে, বাড়ি আছে, সেখানে পৌর করের (হোল্ডিং ট্যাক্স) যে বিষয় রয়েছে -- একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমি এটুকু বলব, আইনের আওতায় একজন মেয়রের যেটুকু ক্ষমতা আছে সেটুকুর পূর্ণ ক্ষমতা প্রয়োগ করে, যতটা পারি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পৌর কর মওকুফ করে দেবো।"

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষার্থী-প্রশিক্ষণার্থীরা এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রফিকুল আলম সংগীত পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন হেলাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রমুখ ।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাদসিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাদসিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য মারুফ আহমেদ মনসুর, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাদসিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য নাজরুল ইসলাম বাবুল, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাদসিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য আহমেদ ইমতিয়াজ মান্নাফী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসন-৫ (১৩, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড)-এর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাদসিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্যা সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ এবং ঢাদসিক এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।  

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন