রুবেল আহমেদ || মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ||
মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবে পসবিদ উন্নয়ন সংস্থা‘র শ্রীমঙ্গল ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মোঃ তোফাজ্জল হোসেন সংবাদ সম্মেলন করেছেন আজ ২২ মার্চ বুধবার দুপুরে। লিখিত বক্তব্য ভুক্তভোগী জানান- গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে কয়েকজন লোক জোরপূর্বক তার গাড়ীর চাবি ছিনিয়ে নেয় এবং প্রতারণা করে সঞ্চয়ের টাকা পসবিদে জমা না করে পালিয়ে বেড়াচ্ছি বলে চিৎকার করতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পরে কয়েকজন লোক এসে তাকে মৌলভীবাজার মডেল থানায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে পসবিদ উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নিবার্হী মোঃ আজাদ আলী তাকে তার নিজ জিম্মায় থানা থেকে অফিসে নিয়ে যান। ভয় ভীতি দেখান এবং প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন সদস্যকে উপস্থিত করেন। সেখানে তাকে নির্যাতন করা হয়। রাত আনুমানিক ২ঘটিকায় অফিস রুমের কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে সবাই চলে যায়। তিনি নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ কল করলে জরুরী ফোন পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানার এস আই সুব্রত তাকে থালা ভেঙ্গে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানায় নিয়ে যান।
পসবিদ উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নিবার্হী ও উনার পরিচিত লোকজন জোরপূর্বক এবি ব্যাংক শ্রীমঙ্গল শাখার তিনটি চেক স্বাক্ষর করে নেন এবং ৩০০ টাকার ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নেন। এবং চেক ডিজনার মামলা দায়ের করবেন বলে হুমকি দেন। তোফাজ্জল এবং তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার-কে জিম্মী করে উক্ত তিনটি চেক ও ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে মর্মে অভিযোগে উল্লেখ করেন। তিনি পসবিদ উন্নয়ন সংস্থার কার্যনিবার্হী কমিটির সভাপতিসহ অন্য সকল সদস্যগণকে অবগত করেন। কিন্তু উনারা তাকে জানান, প্রধান নিবার্হীর অতিথিতেও অনেক ম্যানেজার ও কর্মীর সাথে এমন কর্মকান্ডই সংগঠিত হয়েছে। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ভুক্তভোগী মোঃ তোফাজ্জল হোসেন আরো জানান- আমি সদস্যের টাকা সঞ্চয় হিসেবে জমা নিয়েছি। এবং পসবিদ এ জমা করেছি। আমার কাছে হিসাব রক্ষক ও প্রধান নিবার্হী স্বাক্ষরিত সীট ও প্রাপ্তী স্বীকার রয়েছে। পসবিদ উন্নয়ন সংস্থাকে “সবার জন্য বাসস্থান” ও “মুজিব শতবর্ষ” উক্ত দুইটি প্রকল্পে গৃহ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২২০৩৬৯৮১ টাকা ঋণ প্রদান করে।
কিন্তুু কোনো সদস্যকেও প্রধান নিবার্হী গৃহ নির্মাণ বাবদ ঋণ প্রদান করেন নাই। এই বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট কর্তৃক প্রমাণিত হয়েছে। কালীঘাট ইউপি ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক রিপন, কালীঘাট ইউনিয়নের ইউপি মেম্বার শাওন পাশী, মোঃ ইদ্রিস আলী, দায়াল বোর্নাজি , সম সম্পাদক কাশিনাথ মৃধাসহ কয়েকজন নির্বাচিত প্রতিনিধির স্বাক্ষর ও সীল জাল করে প্রধান নিবার্হী সদস্যের তথ্য প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছেন। যাদের সীল ও স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারী ক্রেডিট অফিসার টুইংকল কর্মকারকে খারাপ ভাষায় গালি দেওয়ায় প্রধান নিবার্হী ও টুইংকল কর্মকারের মধ্যে তর্কের সৃষ্টি হয়। গালি দেওয়া ঠিক হয়নি মর্মে প্রতিবাদ করলে তার উপর ক্ষিপ্ত হন।
গত ১৮ জানুয়ারী প্রধান নিবার্হী‘র স্বাক্ষরীত প্রাইম ব্যাংক শ্রীমঙ্গল ব্রাঞ্চ ও এবি ব্যাংক শ্রীমঙ্গল ব্রাঞ্চের ৬টি চেকের পাতা চুরি হয়। এবং দুইটি চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা হয়। এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় পসবিদ উন্নয়ন সংস্থার শ্রীমঙ্গল ব্রাঞ্চে কর্মরর্ত ক্রেডিট অফিসার রায়হান আহমদ-কে অভিযুক্ত করে অভিযোগ প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে মোঃ তোফাজ্জল হোসেন প্রতিবাদ করে বলেন, চেক বই নির্বাহী‘র আলমারিতে রক্ষিত। আলমারির তালা সুরক্ষিত আছে, এমনকি চুরিও হয় নি তাহলে কিভাবে চেকের পাতা চুরি হল। বিগত ২৭ ফেব্রুয়ারী প্রধান নিবার্হী ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মোঃ তোফাজ্জল হোসেন এর কাছ থেকে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ধার নেন। যাহার প্রাপ্তি স্বীকার তার কাছে রয়েছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী পারিবারিক প্রয়োজনে ছুটি নিয়ে গত ১ মার্চ ঢাকায় চলে যান। সেখানে অবস্থানকালীন সময়ে প্রধান নিবার্হী বিভিন্ন সদস্যদের জানান- তিনি সঞ্চয়ের টাকা অফিসে জমা না করে পালিয়ে গেছেন মর্মে মিথ্যা অপ-প্রচার করেন।
তিনি যোগদানের পর সবুজবাগ, কাকিয়াছড়া, নোয়াগাঁও, উত্তর ভাড়াউড়া ইত্যাদি জায়গাগুলোতে সমিতি গঠন করা হয়। এবং সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রধান নিবার্হীর নির্দেশে হিসাব রক্ষক জিয়াউর রহমান ও কানু রায় প্রনয় যোগ সাজশে কালেকশন সিট ও আদায় যোগ্য রেজিষ্ট্রারে কারচুবি করে সঞ্চয় জমা কম দেখানো হয়েছে। পূর্বের কালেকশন সিটের কপি দেখলে তা পরিস্কার হয়ে যাবে। শ্রীমঙ্গল ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ভুক্তভোগী মোঃ তোফাজ্জল হোসেন উক্ত বিষয়টি উল্লেখ্য করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মর্মে উল্লেখ করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-ভুক্তভোগী‘র স্ত্রী মাহমুদা আক্তার পসবিদ উন্নয়ন সংস্থার শ্রীমঙ্গল ব্রাঞ্চের ক্রেডিট অফিসার মিনতি রাণী শীল, ক্রেডিট অফিসার অজিত ব্যুনার্জি, ক্রেডিট অফিসার টুইংকল কর্মকার, তাহমিনা আক্তার প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন