মৌলভীবাজারে ১৩টি বিপন্ন প্রজাতির শকুনের মৃত্যু

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি\ মৌলভীবাজারে বিষ মিশ্রিত মৃত ছাগল খেয়ে ১৩টি বিপন্ন প্রজাতির শকুনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি শিয়াল, কুকুর ও বিড়ালেরও মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, কয়েক দিন ধরে এলাকায় শিয়ালের উৎপাত বেড়েছে। অনেক ছাগল খেয়েছে শিয়াল। সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের বুড়িকোনা ক্ষেতের মাঠে কে বা কারা মৃত ছাগলের ওপর বিষ প্রয়োগ করে শিয়াল মারার জন্য ৫-৬ দিন আগে টোপ দেয়। সেই বিষ খেয়েই এসব শকুনসহ পশুগুলোর মৃত্যু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৩মার্চ) বিষয়টি জানাজানি হলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজারের বিভাগের লোকজন এলাকায় গিয়ে উপস্থিত হন মুত শকুনের হাড় পালক সংগ্রহ করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের একদল জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে পাঠায় । জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সুত্র জানায় মৌলভীবাজারে প্রাণী সম্পদ বিভাগে পরিক্ষাগার না থাকায় সিলেট আ লিক প্রানি সম্পদ পরিক্ষাগারে পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়। 
গতকাল শুক্রবার সিলেট কৃষি বিশ^ বিদ্যালয়ে অনুজীব বিভাগের প্রফেসর ড.সুলতান আহমদ টিপু,জাহাঙ্গীরনগর বিশ^ বিদ্যালয়ের প্রফেসর আব্দুল আজিজ,মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা রেজাউল করিম চৌধুরী, শকুন সংরক্ষন জীব বৈচিত্র (আইসি এনও) মিষ্টার মাহী,জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সামাদ,সদর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা শাহীনূল হক,ভেটেনারি সার্জন ডা: নিরোদ চন্দ্র সরকার, প্রাণী সম্পদ উপ-সহকারী মো: আনোয়ার সহ বিশেজ্ঞদল এলাকার প্ররিদর্শন করেন। 
স্থানীয় মৌলভীবাজাওে বাসন্দিা আফিফ আহমদ জনান মৌলভীবাজার জেলার স্থানীয় রেমা কালেঙ্গা সংরক্সিত বন থেকে খাদ্যেও অভাবে লোকলয়ে চলে আসে এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতাদেও উদাসীনতার জন্য বন্য প্রাণী মারা যাচ্ছে। 
যুড়িকোনা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, আমি কয়েকদিন আগে এখানে একটি মৃত ছাগল দেখেছিলাম। এরপর কিছু দিন আগে দেখতে পাই অনেকগুলো শকুন মরে পড়ে আছে। স্থানীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজারের সাথে মোবাইল ফোনে  কথা বলে ও তাদের টনক লরেনি। 
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, এমন নিষ্ঠুর কাজ যারা করেছে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি এখনো। তবে আমরা ঘটনা তদন্ত করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিয়াল মারার জন্য বিষ প্রয়োগ করায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা ১০টি মৃত শুকুন উদ্ধার করে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য সিলেট ল্যাবে পাঠিয়েছি। এখানে আরও ৩টি মৃত শকুন রয়েছে। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানায়, মৃত শকুনগুলোর একটির পায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগানো ছিল। গত দু-তিন দিন ধরে স্যাটেলাইট ট্যাগটির কোনো গতিবিধি পাওয়া যাচ্ছিল না। নেটওয়ার্কিং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন, ওই এলাকায় শকুনটি মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এর পর বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণের বিভাগের লোকজন সেখানে গিয়ে ১৩টি শকুন ছাড়াও আরও কয়েকটি শিয়াল, কুকুর ও বিড়ালের মৃতদেহ দেখতে পান। 
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয়দের বিষটোপে বিলুপ্ত শকুনসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। অথচ শকুনগুলো বাঁচিয়ে রাখতে গরু“ জবাই করে মাংস খাওয়ানো হয়েছে। যে বা যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন