সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতের বাসায় গুলি

জিবিডেস্ক //

সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর (আরএসএফ) মধ্যে লড়াইয়ের শুরুর দিকে গত ১৫ এপ্রিল দেশটির রাজধানী খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসা আক্রান্ত হয়। রাষ্ট্রদূতের বাসার দেয়াল ও জানালা ভেদ করে ঢুকে পড়ে মেশিনগানের গুলি। এরপর গত ২২ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ের সময় বাংলাদেশ দূতাবাসের জানালা ও দেয়াল ভেদ করে মেশিনগানের গুলি ঢুকে পড়ে। তবে গোলাগুলির এই দুই ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কেউ হতাহত হননি।

জানা গেছে, সুদানের রাজধানী খার্তুমের বাইরে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

সুদানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সুদানে দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রথম দফায় ৫০০ বাংলাদেশিকে এ মাসের শেষে জেদ্দায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেজন্য দূতাবাস তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিতে বাস ভাড়া করার চেষ্টা করছে। প্রাথমিক অবস্থায় ১০টি বাসে ৫০০ বাংলাদেশিকে পোর্ট সুদান নামে একটি শহরে নিয়ে যাওয়া এবং সেখান থেকে একটি জাহাজ বা ফেরিতে করে নিরাপদে জেদ্দায় পৌঁছানো হবে।

 

বাসা এবং দূতাবাসে হামলার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমকে জানান, আমার বাসায় মেশিনগানের গুলির আঘাত হানার পরও আমরা খার্তুমে বসে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ২০ এপ্রিল ইউরোপের এক বন্ধুপ্রতিম দেশের পরামর্শে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মিশন ও বাসা ছেড়ে রীতিমতো অজানার উদ্দেশে যাত্রা করি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, একই গাড়িতে স্ত্রী, সহকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে সাতজন যাত্রা করেছিলেন। এলাকা ছিল জনশূন্য। একটু পরপরই আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞেস করছেন। গন্তব্য অজানা থাকলেও একপর্যায়ে ঠিক হলো দূতাবাসের তৃতীয় সচিব এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা যে এলাকায় থাকেন, সেখানে যাওয়া হবে।

ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানান, ১৯ এপ্রিল অস্ত্রবিরতি ছিল। ওই সময় মালয়েশিয়া দূতাবাসের একটি গাড়িতে দেশটির পাঁচ কূটনীতিক বিমানবন্দর রওনা হয়েছিলেন। পথে আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তাদের পথরোধ করেন। মালয়েশিয়ার কূটনীতিকেরা আরএসএফ সদস্যদের কাছে তাদের আটকানোর কারণ জানতে চান। তখন ক্ষুব্ধ সুদানের আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা মালয়েশিয়ার কূটনীতিকদের মুঠোফোন কেড়ে নেন। এরপর তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে মিশনে ফিরতে বাধ্য করেন।

তারেক আহমেদ বলেন, মালয়েশিয়ার কূটনীতিকদের সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল। তাই ২০ এপ্রিল রাস্তায় আরএসএফ সদস্যরা আমাদের থামালে তাদের কথামতো গাড়ি থেকে নেমে যাই। আমাদের মুঠোফোনও তাদের দিতে হয়েছিল। পরে আমাদের সুদানি চালক তাদের সঙ্গে কথা বলার পর আমাদের ছেড়ে দেন। ওই দিন বাসা ও দূতাবাস থেকে দূরে আমরা অবস্থান করি।

তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল আমরা আবার খার্তুমে ফিরে যাই। কারণ পাসপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র বাসা ও অফিসে রয়ে গেছে। খার্তুমে ফিরে দেখি যে ভবনে আমাদের বাসা তার পুরোটাই খালি। নিরাপত্তাকর্মীরাও চলে গেছেন। এমন একটা অবস্থায় খার্তুম থেকে দূরে সরে যাওয়াটাই সমীচীন মনে হলো।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন