জিবিডেস্ক //
গত ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এই প্রথম ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে টেলিফোন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বুধবার এক টুইটবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
টুইটবার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং টেলিফোন করেছেন। তার এই ফোনকল দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
চীনের রাষ্ট্রপতির দপ্তরও এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে, ‘চীন সবসময় শান্তির পক্ষে।’
তবে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে ফোনে কী কী প্রসঙ্গে কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে ইউক্রেন বা চীন— কোনো পক্ষ থেকেই বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান অবস্থায় চীনের প্রেসিডেন্টের এই ফোনকল গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চীন যে রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে— তা যুদ্ধের শুরু থেকেই বলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। যুদ্ধে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে— গত দেড় বছরে এমন গুজব ছড়িয়েছে কয়েকবার এবং সেসব গুজবের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর ও বাইডেন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা একাধিকবার চীনকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের এই সংশয় অবশ্য পুরোপুরি ভিত্তিহীন নয়। কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ী করে আসছে চীন। তাছাড়া এই যুদ্ধের কারণে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যত রেজোল্যুশন উপস্থাপন করেছে সেসবের কোনোটিতেই চীন ভোট দেয়নি।
আরও একটি কারণ হলো রাশিয়া ও চীনের মিত্রতা। ২০২২ সালে চীনকে নিজেদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিশ্বস্ত মিত্রদের মধ্যে অন্যতম বলে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধ শুরুর পর গত বছর বেইজিং সফরে গিয়েছিলেন পুতিন, আর চলতি বছর মস্কো সফরে গিয়েছেন জিনপিং।
তবে যুদ্ধের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা ইউক্রেনকে হাজার হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র, অর্থ ও সামরিক সহায়তা দিয়ে এলেও রাশিয়াকে কোনো প্রকার অস্ত্র বা সামরিক সহায়তা এখন পর্যন্ত চীন দেয়নি। বরং বেইজিং বরাবরই বলে আসছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যেসব সমস্যা রয়েছে— সেসব আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান সম্ভব।
এই যুদ্ধ বন্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে ১২টি পয়েন্ট সম্বলিত একটি প্রস্তাবনাও হাজির করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা সেই প্রস্তাবনায় আশাব্যাঞ্জক তেমন কিছু পাননি; তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করতে চান বলে উল্লেখও করেছিলেন।
চীনের প্রেসিডেন্টের এই ফোনকলের সংবাদটি দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে। দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যেও ব্যাপারটি সাড়া ফেলেছে।
এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘চীন অবশ্যই অচলাবস্থা ভেঙ্গে বরফ গলাতে সক্ষম হবে।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন