ক্রেমলিনে হামলা নিয়ে পেসকভের অভিযোগ মিথ্যা: হোয়াইট হাউস

জিবিডেস্ক //

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ড্রোন হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই দায়ী নয় বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ও প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবি।

রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে যে অভিযোগ করেছেন, তা ‘পুরোপুরি মিথ্যে’ বলেও দাবি করেছেন বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম শীর্ষ এই কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এমএসএনসিবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জন কিরবি বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার সঙ্গে আমাদের কোনো প্রকারের সংশ্লিষ্টতা নেই। পেসকভ যে অভিযোগ এনেছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই। আরও স্পষ্টভাবে যদি বলতে হয়, সেক্ষেত্রে আমি বলব— পেসকভের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের নাম গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেস। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের সন্নিকটবর্তী এই ভবনেই থাকেন ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার দিবাগত রাতে গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসে দু’টি বিস্ফোরকভর্তি ড্রোন আঘাত হানে। এই হামলার পরপরই এজন্য ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছিল রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাশিয়ার বৈরী এ দু’টি দেশই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন কার্যালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পেসকভ বলেন, ‘কিয়েভ এবং ওয়াশিংটনের (অভিযোগ অস্বীকারের) এই ব্যাপারটি পুরোপুরি হাস্যকর। আমরা খুব ভাল করেই জানি, এ ধরনের সুচিন্তিত সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ওয়াশিংটনের পক্ষেই সম্ভব। এত পরিকল্পিত হামলা চালানোর মতো সক্ষমতা কিয়েভের নেই।’

‘আমরা আগেও বলেছি, এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সামনে পেছন থেকে অস্ত্র চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন যা বলছে, কিয়েভ তা-ই করছে। তারা এটা স্বীকার করুক আর না করুক— প্রকৃত সত্য আমরা জানি, অন্যরাও জানে,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন পেসকভ।

আগামী ৯ মে রাশিয়ায় বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান নাৎসি বাহিনীর আত্মসমর্পণের এ দিনটি ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে রাশিয়া৷

সেই আয়োজনের প্রস্তুতি চলার মধ্যে বুধবার সকালের আলো ফোটার আগে মস্কোর ক্রেমলিনে রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার খবর আসে আন্তর্জাতিক সব সংবাদমাধ্যমে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে একটি ড্রোনকে উঁচু দেয়াল ঘেরা প্রাসাদের গম্বুজের উপর বিস্ফোরিত হতে দেখা যায়। এরপর সেখানে আগুন জ্বলতেও দেখা যাচ্ছিল। প্রাসাদের মূল ভবনের পেছনে ধোঁয়া উড়তেও দেখা গেছে আরও ভিডিওতে।

হামলার পরপরই ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্রেমলিন লক্ষ্য করে হামলায় দুটি ড্রোন ব্যবহৃত হয়েছিল। দুটিকেই ভূপাতিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি।

হামলায় পুতিনের কিছু হয়নি উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী এই হামলা রুশ প্রেসিডেন্টের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। তার নির্ধারিত কর্মসূচিগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে, তিনি তাতে অংশও নিচ্ছেন।’

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম রিয়া নভোস্তি জানিয়েছে, হামলার সময় গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসে ছিলেন না পুতিন।

বৃহস্পতিবার এমসএসএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জন কিরবি স্মরণ করিয়ে দেন, ইউক্রেন নিজ ভূখণ্ডের বাইরে অন্য কোথাও হামলা চালাবে না— এই শর্তেই দেশটিকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

‘এ পর্যন্ত কিয়েভের সঙ্গে ওয়াশিংটনের প্রকাশ্য ও গোপন যত বৈঠক হয়েছে, প্রতিটিতেই আমরা স্পষ্টভাবে কিয়েভকে বলেছি— ওয়াশিংটন কখনও তাদেরকে ইউক্রেনের ভূখণ্ডের বাইরে হামলা চালাতে উৎসাহিত করবে না, বাধ্যও করবে না,’ এমএসএনবিসিকে বলেন কিরবি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন