বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালুর দাবিতে খুলনার আটরা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ন গেটে সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচীতে বিনা উসকানিতে পুলিশী বাধা, ইট-পাটকেল, লাঠিচার্জ ও টিয়ার সেল নিক্ষেপের ঘটনায় ১১ জন শ্রমিক আহত ও ৪ জনকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেছেন, দাবী আদায়ের শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশী বাঁধা সংবিধান ও গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকারি পাটকল বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক শ্রমিকের জীবন চলছে মানবেতরভাবে। কর্মহারা এই শ্রমিকদের কেউ কেউ সহজ পেশা হিসেবে রিকশা চালাচ্ছেন। কেউবা ফল বিক্রেতা কিংবা নির্মাণ শ্রমিকের কাজেও নেমেছেন। আর এখনও কাজ জোগাড় করতে না পেরে বেকার জীবন পার করছেন অনেকে। এই অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালুর দাবিতে আন্দোলন তাদের জীবন রক্ষার তাগিদেই। এই জীবন রক্ষার অধিকার আদায়ের মিছিলে পুলিশী বাঁধা-হামলা ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ সরকারের জনবিরোধী কর্মকান্ডেরই অংশ।
নেতৃদ্বয় বলেন, করোনাকালেও সরকার লুটপাট-দুর্নীতি এমনকি মাস্ক নিয়েও দুর্নীতি করে। যখন ভর্তুকি দিয়ে আরও মিল-কারখানা সচল করার দাবি উঠেছে, তখন এ সরকার পাঠকলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। শাসকগোষ্টির লুটপাট-দুর্নীতি কত প্রকার ও কী কী তার বড় উদাহরণ হচ্ছে এ পাটখাত। স্বাধীনতার পরে এ দেশে ৬০টির মতো জুট মিল ছিল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকার এসে এ মিল-কারখানাগুলো বিশ্বব্যাংকের বুদ্ধিতে বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ বিশ্ব ব্যাংক চায় বাংলাদেশের জুট মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাক।
তারা আরো বলেন, ২০০২ সালে বিএনপি সরকার যখন আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দেয় তখন এ আওয়ামী লীগ বলেছে বিএনপি পাটখাতকে ধ্বংস করছে। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগ সরকারও সকল জুট মিল বন্ধ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমানিত হলো লুট-পাটের ক্ষেত্রে এরা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এরা বিশ্ব ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষায় নিজ দেশের মানুষকে পিষ্ট করে মারতেও কুন্ঠিত হয় না।
নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয় সেগুলো বন্ধ করতে পারে না সরকার। বন্ধ করতে পারে শুধু জুট মিলগুলো। যেখান থেকে শ্রমিকরা রুটি-রুজি পায়। ঋণখেলাপিদের মাফ করে দিতে পারে, কিন্তু শ্রমিকরা যেখান থেকে রুটি-রুজি পায় সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয় সেগুলো ঠেকাতে পারে না। শুধু পারে মিল-কল-কারখানাগুলো বন্ধ করতে।
তারা খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের সমাবেশে হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, আহতদের সুচিকিৎসা ও গ্রেফতারকৃতদের নি:শর্ত মুক্তির দা্বী জানিয়ে বলেন, ক্ষুদায় জ্বালায় মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যাবে তখন জনগনকে কোন শক্তিই আটকের রাখতে পারবে না।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন