জিবিডেস্ক //
টানা ১৪ মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। আর পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর সহায়তায় প্রতিরোধ যুদ্ধ চালাচ্ছে কিয়েভ। আর এর মধ্যে ইতালি, জার্মানি ও ফ্রান্স সফরে গিয়ে আরও সহায়তার আশ্বাস পেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এছাড়া ইউরোপীয় ঐক্যে বিশেষ অবদানের জন্য শার্লেমান পুরস্কারও গ্রহণ করেছেন ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পর পর তিনটি ইউরোপীয় দেশ সফর করে ইউক্রেনের জন্য আরও সমর্থন ও সামরিক সহায়তা নিশ্চিত করেছেন। একইসঙ্গে ইতালি, জার্মানি ও ফ্রান্স ইউক্রেনের প্রতি অব্যাহত সহায়তার অঙ্গীকারও করেছে। রোমে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে নিজস্ব উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের জন্য জার্মানির সমর্থন ও সহায়তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, ধীর গতি নিয়ে কিয়েভে যথেষ্ট ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে সেই কালো মেঘ কেটে গেছে। বার্লিন সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি একাধিক ক্ষেত্রে ‘সত্যিকারের বন্ধু ও সহযোগী’ দেশ হিসেবে জার্মানির সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পরই জার্মানির অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। জেলেনস্কি দাবি করেন, ইউক্রেন শুধু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিজস্ব ভূখণ্ড রাশিয়ার দখলমুক্ত করতে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে, রাশিয়ার ভূখণ্ড দখলের কোনও চেষ্টা করবে না।
অতীতের উত্তেজনা কাটিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন জেলেনস্কি। সেইসঙ্গে জার্মানির জনগণ ও করদাতাদের প্রতি ইউক্রেনের মানুষের আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, জেলেনস্কির সফরের ঠিক আগে জার্মানি আরও এক দফা সামরিক সহায়তার ঘোষণা করেছে। ২৭০ কোটি ইউরো মূল্যের সেই প্যাকেজের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট শলৎসের কাছে উন্নত বোমারু বিমান সরবরাহের অনুরোধ করেন।
এমনকি তিনি সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশকে নিয়ে এক ‘ফাইটার জেট কোয়ালিশন’ গঠনের উদ্যোগের কথাও বলেন। শলৎস অবশ্য সেই অনুরোধ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি।
এর আগে গত রোববার জেলেনস্কি জার্মানির পশ্চিমে আখেন শহরে শার্লেমান পুরস্কার গ্রহণ করেন। ইউরোপীয় ঐক্যের জন্য জেলেনস্কি ও ইউক্রেনের মানুষকে যৌথভাবে এ বছরের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পুরস্কার গ্রহণ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি ইউক্রেনের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন, প্রতিদিন নিজেদের স্বাধীনতা এবং ইউরোপীয় মূল্যবোধ রক্ষার জন্য লড়াই করছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘তাদের প্রত্যেকে আজ এখানে উপস্থিত থাকলে ভালো হতো।’
তার মতে, ইউক্রেন শান্তি ছাড়া কিছুই চায় না। একমাত্র বর্তমান সংকটে জয়ের মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব। ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপের ভবিষ্যতও নির্ধারণ করতে পারে বলে জেলেনস্কি মনে করেন। কারণ রাশিয়া যে কোনও ধরনের নিষ্ঠুরতা ও পাপের মাধ্যমে ইউরোপীয় একত্রিকরণের ইতিহাসের চাকা পেছন দিকে ঠেলতে বদ্ধপরিকর।
জার্মানির পর ফ্রান্স সফরে গিয়েও জেলেনস্কি আরও সমর্থন পেয়েছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্যারিসে জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতের পর আরও লাইট ট্যাংক ও আর্মার্ড যান সরবরাহের কথা ঘোষণা করেন।
সেইসঙ্গে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষণও দেবে ফ্রান্স। গত রোববার জেলেনস্কির সফরের শুরুতেই ম্যাক্রোঁ এক টুইট বার্তায় লেখেন, ইউরোপের সঙ্গে ইউক্রেনের বন্ধন আরও বাড়ছে। সেইসঙ্গে চাপ বাড়ছে রাশিয়ার ওপর।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন