জিবিডেস্ক //
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের কাছে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার জেট বিক্রি করতে অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত বাধ্যবাধকতার সমস্যার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর আমেরিকার এই দেশটি।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত বাধ্যবাধকতার সমস্যার কারণে থাইল্যান্ডের কাছে এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার জেট বিক্রি করতে অস্বীকার করেছে বলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির বিমান বাহিনী বৃহস্পতিবার জানিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, সামরিক জোট ন্যাটোর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান মিত্র হিসেবে ২০০৩ সালে মনোনীত হয়েছিল থাইল্যান্ড। গত বছর অত্যাধুনিক নতুন মার্কিন যুদ্ধবিমান কিনতে দেশটি ১৩.৮ বিলিয়ন বাথ বাজেট বরাদ্দ রেখেছিল। কারণ থাইল্যান্ডের বেশিরভাগ যুদ্ধবিমানই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-৫ এবং এফ-১৬ মডেলের।
পুরোনো হয়ে যাওয়া এসব বিমানের স্থানে নতুন যুদ্ধবিমান আনতে চায় থাইল্যান্ড এবং সেই লক্ষ্যে আটটি লকহিড মার্টিন এফ-৩৫এ ফাইটার জেট কিনতে চেয়েছিল দেশটি।
থাই বিমান বাহিনীর মুখপাত্র এয়ার চিফ মার্শাল প্রপাস সোর্নচাইডি এক বিবৃতিতে বলেছেন, পঞ্চম-প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমান বিক্রয়ের শর্তের মধ্যে সময়ের সীমাবদ্ধতা, প্রযুক্তিগত বাধ্যবাধকতা এবং রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র তাই এই ফাইটার জেট বিক্রয় করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, এফ-৩৫ মডেলের যুদ্ধবিমান বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে একটি এবং এটি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র তার নিকটতম মিত্রদের কাছে বিক্রি করে থাকে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যেসব মার্কিন মিত্রের কাছে এফ-৩৫ মডেলের যুদ্ধবিমান রয়েছে তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুর অন্যতম।
থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী ভিয়েতনাম যুদ্ধের আমল থেকে মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে। সেসময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি মার্কিন বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর সদস্যদের তার ঘাঁটিতে আতিথেয়তা দিয়েছিল। এছাড়া থাইল্যান্ড বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বার্ষিক ‘কোবরা গোল্ড’ প্রশিক্ষণ মহড়ার আয়োজন করে আসছে।
তবে ২০০৬ সালে এবং ২০১৪ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থান এবং প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি চীনের প্রতি সেনা-সমর্থিত সরকারগুলোর সম্পর্কের বিষয়ে উদ্বেগের কারণে এই উষ্ণ সম্পর্ক অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
প্রপাস অবশ্য বলেছেন, বিমান বাহিনী এখনও নিজেদের হাতে থাকা এফ-১৬ জেটগুলো প্রতিস্থাপন করবে এবং আপগ্রেড করা এফ-১৫ এবং এফ-১৬এস মডেলের ফাইটার জেট দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এগুলো দ্রুত স্থানান্তর করা যেতে পারে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন