জিবিডেস্ক //
কয়েকদিন আগেও বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজ জানিয়েছিলেন ফেরার ব্যাপারে তিনি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ নিশ্চিত। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার তিনি আর্জেন্টাইন মহাতারকার হাতেই ছেড়ে দিয়েছিলেন। এরপর মেসির বাবা জর্জ মেসিও জানিয়েছিলেন, সন্তানকে তিনি বার্সায় দেখতে পছন্দ করবেন। তবে সব আলোচনাকে পাশ কাটিয়ে অবশেষে আমেরিকান ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিচ্ছেন মেসি। বার্সার আশায় গুড়েবালি করা মেসির এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে এবার কথা বলেছেন কোচ জাভি।
এর আগে দুই সিজন পিএসজিতে কাটানো মেসিকে নিয়ে ম্যারাথনে নেমেছিল তিন ক্লাব। সেখানে বার্সেলোনা ও লোভনীয় সব প্রস্তাব নিয়ে আসা সৌদি ক্লাব আল-হিলালকে হারিয়ে দিয়েছে ডেভিড বেকহামের দল মায়ামি। অবশ্য মেসির পছন্দের শীর্ষে ছিল তার সাবেক কাতালান ডেরাটি। কিন্তু এত আলোচনা এবং প্রস্তুতির পরও ন্যু ক্যাম্পের দলটি শেষপর্যন্ত মেসির চুক্তির বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। এছাড়া অন্য ফুটবলারদের দল ছাড়া কিংবা বেতন কমানোর মতো বিষয় পছন্দ হয়নি মেসির।
এদিকে শুরু থেকেই আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তার সাবেক সতীর্থ জাভি। সেজন্য লা লিগার সঙ্গে অনেক দর-কষাকষির পর তাদের অনুমোদনও নিয়েছিল। কিন্তু তারপরই শুনতে হলো সেই হতাশাজনক খবর। যা নিয়ে বার্সা ইতোমধ্যে মেসিকে শুভকামনাও জানিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে জাভির মন্তব্যও এক্ষেত্রে আশা করেছিলেন ক্লাব সমর্থকরা।
আজ (৮ জুন) সেই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভিস টুইচে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাভি, ‘(পিএসজিতে) এই দুটি বছর তার ভালো কাটেনি এবং এখন সে আর একই ধরনের চাপ নিতে চায় না। এটা একটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত এবং বর্তমান পরিস্থিতিও আমাদের সাহায্য করেনি। তবে এটা লিওর সিদ্ধান্ত এবং আমাদেরকে তা সম্মান করতে হবে, সে ইতিহাসের সেরা।’
তিনি আরও বলছেন, ‘হয়তো সে ব্যাপারটা পরিষ্কারভাবে দেখতে পারেনি এবং আমাদের সেটাকে সম্মান দেখাতে হবে- অনেক সময় আমরা আরেকজনের দিকটা ভেবে দেখি না, আমাদের সহানুভূতির অভাব থাকে এবং লিওর অবস্থানে থাকা কোনো সহজ ব্যাপার না। মেসির অবস্থা ভেবে দেখুন, যে পরিমাণ মনোযোগ তার ওপর থাকে, সে কখনোই নির্ভার থাকতে পারেনি। মাঠে এবং বাইরে তাকে নিখুঁত আচরণ করতে হয়, প্রতিটি দিক থেকেই সেরা হতে হয় তাকে।’
এর আগে বার্সায় না ফেরার যুক্তি হিসেবে মেসি বলেছিলেন, ‘আমি সত্যিই ফিরতে চেয়েছিলাম, উদগ্রীব হয়ে ছিলাম ফেরার জন্য। কিন্তু আমি চলে যাবার সময় যে পরিস্থিতি হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি চাচ্ছিলাম না। আমার ভবিষ্যৎ অন্য কারও হাতে ছেড়ে দিতে চাই না। আমি শুনেছি লা লিগা অনুমোদন দিয়েছিল, কিন্তু তারপরও অনেক কিছু করতে হতো। শুনেছিলাম (আমার জন্য) বার্সেলোনাকে খেলোয়াড় বেচতে হবে বা খেলোয়াড়দের বেতন কমাতে হবে। আমি এর ভেতর দিয়ে যেতে চাইনি।’
২০২১ সালে মেসিকে কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বার্সা ছাড়তে হয়েছিল, তা কারও অজানা নয়। আর্থিক সংকটে ভোগা দলটি মেসিকে বিদায় নিতে অনেকটা বাধ্য করেছিল। এরপর পরবর্তী দুই মৌসুমে তিনি পিএসজির হয়ে খেলেছেন। কিন্তু সেখানেও তিনি স্বস্তিতে ছিলেন না। অনেকবারই তাকে দর্শকদের মুখে দুয়ো শুনতে হয়েছে। তাই নতুন করে পুরনো ক্লাবে ফেরাটা তার জন্য বাড়তি চাপও তৈরি করতো বলে মত মেসির।
একই বিষয় ওঠে এসেছে জাভির কণ্ঠেও, ‘প্রচুর সময় এমন ঘটে যে আপনি কোনো কিছু চান, কিন্তু পরিস্থিতি আপনাকে সাহায্য করে না। সে খুব ভালোভাবে সবকিছু ব্যাখ্যা করেছে। সে তার ওপর থাকা চাপ কমাতে চায় এবং যদি সে এখানে ফিরত, তাহলে তার জন্য চাপ বেড়ে দশে দশ হয়ে যেত।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন