জিবিডেস্ক //
ইউক্রেনে চলমান আগ্রাসনের মধ্যে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার অভিযোগ রয়েছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। অন্যদিকে পশ্চিমা চাপ সত্ত্বেও মস্কোকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়া বন্ধ করেনি তেহরান।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করা নিয়ে ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এমনকি এই ধরনের কর্মকাণ্ডের পরিণতি সম্পর্কেও দেশটিকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১০ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহের পরিণতি সম্পর্কে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে শনিবার সতর্ক করে দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর কার্যালয় শনিবার এই তথ্য সামনে এনেছে।
রয়টার্স বলছে, শনিবার এক ফোন কলে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে যে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে তা ‘অবিলম্বে বন্ধ’ করার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির গতিপথ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়াকে ইরানের তৈরি ড্রোন সরবরাহ করা ইরানের পরমাণু চুক্তিসহ ২০১৫ সালের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে।
২০১৫ সালের জাতিসংঘের প্রস্তাবের অধীনে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত চালু ছিল।
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউস বলেছে, রাশিয়া ইরানের সাথে তার প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও গভীর করছে বলে মনে হচ্ছে এবং তেহরানের কাছ থেকে দেশটি শত শত একমুখী আক্রমণকারী ড্রোন হাতে পেয়েছে, যা দিয়ে তারা ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে।
প্রকাশিত নতুন তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে হোয়াইট হাউস জানায়, আনক্রুড এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি) নামে পরিচিত এই ড্রোন ইরানে তৈরি করা হয়। কাস্পিয়ান সাগর পেরিয়ে পাঠানো এই ড্রোনগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ বাহিনী ব্যবহার করেছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কিয়েভে হামলা চালাচ্ছে। ইউক্রেনের জনগণকে আতঙ্কিত করতে ইরানি ইউএভি ব্যবহার করছে এবং রাশিয়া-ইরান সামরিক অংশীদারিত্ব আরও গভীর হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা উদ্বিগ্ন ইরানি ইউএভি তৈরি করতে ইরানের সঙ্গে কাজ করছে রাশিয়া। তারা এগুলো রাশিয়ায় বসেই বানাচ্ছে। রাশিয়াকে সাহায্য করছে ইরান।’
কিরবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য রয়েছে, রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে একটি ড্রোন তৈরির কারখানা বানাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ পাচ্ছে যা পরের বছরের শুরুতে সম্পূর্ণরূপে চালু হতে পারে। তার দাবি, ‘রাশিয়ার আলাবুগা নামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এই ইউএভি উৎপাদন কেন্দ্রের পরিকল্পিত অবস্থানের স্যাটেলাইট চিত্র আমরা প্রকাশ করছি।’
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহের জন্য একটি প্রতিরক্ষা প্রস্তুতকারকের ইরানি কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইরান রাশিয়ায় ড্রোন পাঠানোর কথা স্বীকার করেছে। তবে তারা বলেছে, সেগুলো ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির আগে পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে ইউক্রেনে ইরানি ড্রোন ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেছে মস্কো। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, আগস্ট থেকে ইরান কয়েকশ ড্রোন রাশিয়াকে হস্তান্তর করেছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন