চীনকে চাপে ফেলতে এবার নৌ-মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে ডাকলো ভারত

   জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

চীনের ওপর চাপ বাড়াতে এবার নৌ-মহড়ায় আমেরিকা ও জাপানের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াকেও যোগ করলো ভারত।

লাদাখ-সংঘাত পর্বে চীনকে চাপে রাখতে ভারত দ্বিমুখি নীতি নিয়ে চলতে চাইছে। তার মধ্যে অন্যতম, মালাবার নৌ মহড়ায় আমেরিকা ও জাপান ছাড়াও অস্ট্রেলিয়াও থাকবে। দ্বিতীয় নীতি নিয়ে এখনো ভাবনাচিন্তা চলছে। ভারত চাইছে, তাইওয়ানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে। চীন এই দুটি বিষয়েরই ঘোর বিরোধী। কিন্তু লাদাখ-কাণ্ডের পর চীনের বিরোধিতাকে আমল না দিয়ে এভাবেই বেইজিংকে চাপে রাখতে চাইছে দিল্লি।

 

সরকারি নাম হলো মালাবার নৌ মহড়া। ১৯৯২ সাল থেকে এই মহড়া চলছে। প্রথমে ভারত ও আমেরিকা এই মহড়ায় অংশ নিত। ২০১৫ সালে জাপানও তাতে যুক্ত হয়েছে। তাতেও চীনের যথেষ্ট আপত্তি ছিল। অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘদিন ধরেই এই নৌ মহড়ায় অংশ নিতে চাইছে। ২০০৭ সালে তারা একবার অংশ নিয়েছিল। কিন্তু চীনের ঘোরতর আপত্তিতে ভারত আর তাদের নৌ মহড়ায় ডাকেনি।

কিন্তু এখন সময় বদলেছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এতটাই তলানিতে যে ভারত আর বেজিং-এর আপত্তির তোয়াক্কা করছে না। সম্প্রতি এই চার দেশের বিদেশমন্ত্রীরা টোকিওতে মিলিত হয়েছিলেন। এই চার দেশের জোটকে বলা হয় কোয়াড। করোনাকালে চার দেশের বিদেশমন্ত্রী টোকিওতে যে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন, সেটাও কী ভাবে চীনের মোকাবিলা করা হবে, কী করে বেজিংকে চাপ দেওয়া হবে, তা নিয়ে।

কোয়াডের বৈঠকের পরই অস্ট্রেলিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মালাবার নৌ মহড়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে আরো দেশের সহযোগিতা চায়। সে কারণেই মালাবার নৌ মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

চীনকে চাপে রাখার জন্য প্রবলভাবে চেষ্টা করছে ভারত সহ চার দেশের জোট কোয়াড। প্রশ্ন হলো, অস্ট্রেলিয়াকে মালাবার নৌ মহড়ায় অন্তর্ভুক্ত করে চীনকে কতটা চাপে রাখা যাবে?

অবসরপ্রাপ্ত লেফটানান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, “প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে আমাদের মাথায় বরাবরই অস্ট্রেলিয়া ছিল। কিছুদিনের মধ্যে সম্ভবত নিউজিল্যান্ডকেও মালাবার নৌ মহড়ায় ডাকা হবে। অস্ট্রেলিয়াকে ডেকে একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে চীনকে। এটা নিঃসন্দেহে সাহসিকতার পরিচয়।”

দীর্ঘদিন ধরে বিদেশ মন্ত্রকের খবর করা প্রবীণ সাংবাদিক সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, চীনকে চাপ দেয়ার জন্যই কোয়াড চেষ্টা করে যাচ্ছে। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, “সাউথ চায়না সি এবং ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে চীন আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে চলছে। সেটাকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স করার জন্য আমেরিকা, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া চেষ্টা করছে। এই চার দেশের একজোট হয়ে চাপ দেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একা না চলে শক্তিশালী চারটি দেশ একজোট হয়ে চীনকে চাপ দিতে চাইছে। তার একটা প্রভাব তো আছেই।”

উৎপল ভট্টাচার্য মনে করেন, “চীনকে একঘরে করাটা মুসকিল কাজ তো বটেই। বিশেষ করে চীন বিভিন্ন দেশে বন্দর তৈরি করে ফেলেছে। একসময় দিয়াগো গার্সিয়ায় মার্কিন ঘাঁটি নিয়ে কত বিক্ষোভ, কত প্রতিবাদ হয়েছে। চীন কিন্তু বিভিন্ন দেশে বন্দর বানিয়ে, অত্যন্ত শক্তিশালী নৌ বাহিনী গঠন করে নিজেদের শক্তি দেখিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চার দেশ এক হয়ে চীনকে চাপ দিচ্ছে। একটা বার্তা দেয়ার চেষ্টা করছে।”

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন