রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আগামীকাল কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১১২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১১২তম জন্মবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
কবি সুফিয়া কামালের জন্ম ১৯১১ সালের ২০ জুন। তৎকালীন বাঙালি মুসলমান নারীদের লেখাপড়ার সুযোগ সীমিত থাকলেও সুফিয়া কামাল নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া করেন এবং ছোটবেলা থেকেই কবিতাচর্চা শুরু করেন। সুললিত ভাষা ও ব্যঞ্জনাময় ছন্দে তাঁর কবিতায় ফুটে উঠত সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের পাশাপাশি সমাজের সার্বিক চিত্র। নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণার উৎস। ১৯২৬ সালে কবির প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ প্রকাশিত হয় সওগাত পত্রিকায়৷ ১৯৩৮ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাঁঝের মায়া’ প্রকাশিত হলে রবীন্দ্রনাথ এ কাব্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ কাব্যগ্রন্থের ভূমিকা লিখেন কাজী নজরুল ইসলাম। সুফিয়া কামাল সুদীর্ঘকাল ধরে সাহিত্যচর্চা, সমাজসেবা ও নারী কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন।
কবি সুফিয়া কামাল বাংলাদেশের নারী সমাজের এক অনুকরণীয় উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুফিয়া কামাল নারী সমাজকে কুসংস্কার আর অবরোধের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। দেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। নারীদের সংগঠিত করে মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা, দেশাত্মবোধ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠাই ছিল সুফিয়া কামালের জীবনব্যাপী সংগ্রামের প্রধান লক্ষ্য।
কবি সুফিয়া কামাল রচিত সাহিত্যকর্ম নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গভীর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি মহীয়সী এ নারীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
জয় বংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন