জুলাই মাসে ফের শুরু হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি সংলাপ?

রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে থেমে থাকা শান্তি সংলাপ আর কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন দেশের উদ্যোগে আগামী জুলাই মাস থেকে ফের শান্তি সংলাপে বসতে যাচ্ছেন মস্কো ও কিয়েভের সরকারি প্রতিনিধিরা।

জার্মানির সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম এআরডি টিভি চ্যানেলের বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে চীন, ভারত, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিদের একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানও উপস্থিত ছিলেন সে বৈঠকে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের যেসব দেশ নিরপেক্ষতা এবং যুদ্ধ এড়িয়ে সংলাপের মাধ্যমে উভয় দেশের সমস্যা সমাধানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তাদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে চীন, ভারত, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য শুরু থেকেই সরাসরি ইউক্রেনের পক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তবে নিজের এই অবস্থানের খানিকটা বিপরীতে গিয়েই গত সপ্তাহে কোপেনহেগেনের বৈঠকে উপস্থিত ছিল দেশটি।

এই বৈঠকে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি জরুরীও ছিল। কারণ, মূলত ইউক্রেনের আপত্তির কারণেই শান্তি সংলাপ স্থবির পর্যয়ে রয়েছে এবং ওয়াশিংটনের প্রতি অনুগত কিয়েভকে শান্তি সংলাপে ফের নিয়ে আসার ক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। গত বছর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে শত শত কোটি ডলারের আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তার ফলে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের তিক্ততার জেরে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নতুন করে মৈত্রী গড়ে উঠছে মস্কোর। এই ব্যাপারটি ওয়াশিংটনকে সম্প্রতি উদ্বিগ্ন করে তুলছে এবং সুলিভানের বৈঠকে যোগ দেওয়ার কারণও মূলত এটাই।

কোপেনহেগেনের বৈঠকে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেনের শান্তিসংলাপ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনী অভিযান শুরুর এক সপ্তাহ পর বেলারুশের উদ্যোগে প্রথমবার শান্তি সংলাপ শুরু হয় দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে। কিন্তু কিছুদিন পরই তা ভেস্তে যায়।

পরে গত বছরের মাঝামাঝি তুরস্কের উদ্যোগে আঙ্কারায় ফের শান্তি সংলাপ শুরু হয়; কিন্তু কিছুদিন পর একই পরিণতি হয় সেটিরও।

শান্তি সংলাপের পুনরায় শুরুর ক্ষেত্রে মস্কোর শর্ত হলো— ক্রিমিয়াসহ গত দেড় বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনের যেসব এলাকা রুশ ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে— সেগুলোকে রাশিয়ার বলে স্বীকৃতি দিতে হবে ইউক্রেনকে। অন্যদিকে, কিয়েভ জানিয়েছে— ক্রিমিয়া ও ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়ার দখলে রয়েছে— সেগুলোকে ফিরিয়ে দিতে মস্কো সম্মত থাকলেই কেবল শান্তি সংলাপ শুরু হতে পারে।

উভয় দেশ নিজ নিজ অবস্থানে অটল থাকায় এতদিন ধরে স্থবির হয়ে আছে শান্তি সংলাপ।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন