রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ গত ২৩ জুন হঠাৎ করে বিদ্রোহ করে। আর এ বিদ্রোহের পর দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ দুই জেনারেল ভ্যালারি গেরাসিমোভ এবং সের্গেই সুরোভিকিন আড়ালে চলে গেছেন। গুঞ্জন ওঠেছে, ‘কুখ্যাত’ কমান্ডার হিসেবে পরিচিত সুরোভিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালারি গেরাসিমোভকে শনিবারের ওই বিদ্রোহের পর টিভি চ্যানেলে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। ওইদিন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন দাবি করেছিলেন, গেরাসিমোভকে তার হাতে তুলে দিতে হবে। এছাড়া গত ৯ জুন থেকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিবৃতিতে গেরাসিমোভের নামও উল্লেখ করা হয়নি।
অপরদিকে সিরিয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো জেনারেল সুরোভিকিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম মস্কো টাইমস। সিরিয়ান শহরকে ধসিয়ে দেওয়ার কারনে তাকে ‘কুখ্যাত কমান্ডার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াগনারের বিদ্রোহ সম্পর্কে আগে থেকেই জানতেন জেনারেল সুরোভিকিন। এখন তদন্ত করা হচ্ছে— এর সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা।
তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তর ক্রেমলিন সুরোভিকিনের গ্রেপ্তারের গুঞ্জনের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলেছে, বিদ্রোহের পর অনেক গল্প বের হয়েছে এবং সামনেও বের হবে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বীকার করা না হলেও কয়েকজন সামরিক ব্লগার জানিয়েছেন, শনিবারই সুরোভিকিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিনের পর থেকে তার পরিবার আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।
সুরোভিকিন সিরিয়ায় সফলভাবে বাসার আল-আসাদ বিরোধীদের দমন করায়— তাকে ইউক্রেন যুদ্ধের কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন পরই তাকে সরিয়ে দিয়ে আবার ভ্যালারি গেরাসিমোভকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এছাড়া ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু ও ভ্যালারি গেরাসিমোভের সমালোচনা করলেও, তিনি সুরোভিকিনের প্রশংসা করতেন। যেদিন ওয়াগনার বিদ্রোহ শুরু করে, সেদিন সুরোভিকিন একটি ভিডিওতে বিদ্রোহ থামানোর আহ্বান জানান। তবে ওই সময় তাকে অনেকটা বিধ্বস্ত দেখা যাচ্ছিল।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক প্রভাবশালী কর্মকর্তার টেলিগ্রাম চ্যানেল রায়বার জানিয়েছে, ওয়াগনারের বিদ্রোহের পর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীতে এখন শুদ্ধি অভিযান চলছে।
চ্যানেলটিতে জানানো হয়েছে, ওয়াগনারের বিদ্রোহ প্রাথমিক অবস্থাতেই থামাতে যেসব সেনা কর্মকর্তা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। আর যারা সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে।
তবে সশস্ত্র বাহিনীতে এখন শুদ্ধি অভিযান চালানোর বিষয়টি— ইউক্রেনে রাশিয়ার কথিত সামরিক অভিযানে প্রভাব ফেলতে পারে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন